গাজার বাসিন্দাদের ভিসা স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:১৮ পিএম
গাজার বাসিন্দাদের ভিসা স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দাদের জন্য সব ধরনের ভ্রমণ ভিসা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (১৬ আগস্ট) দেশটির পররাষ্ট্র দফতর জানায়, অস্থায়ী চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তার উদ্দেশ্যে সীমিত সংখ্যক ভিসা প্রদানের প্রক্রিয়া ‘পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত পর্যালোচনার’ কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক্স অ্যাকাউন্টে জানানো হয়, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অল্পসংখ্যক চিকিৎসা ও মানবিক ভিসা অনুমোদিত হয়েছিল। তবে এই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেটি নতুন করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত গাজার বাসিন্দাদের কোনো ধরনের ভিসা দেওয়া হবে না।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসেই ফিলিস্তিনি অথরিটি ট্রাভেল ডকুমেন্টধারীদের ৬৪০টি বি১/বি২ ক্যাটাগরির মার্কিন ভিসা দেওয়া হয়েছিল। এই ভিসার আওতায় অনেকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারতেন। পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনিদের জন্য মোট ৩ হাজার ৮০০টিরও বেশি ভিজিট ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

তবে এই ভিসা স্থগিতের ঘোষণার পেছনে এক বিতর্কিত ঘটনাই মূল ভূমিকা রেখেছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) মার্কিন ডানপন্থি কর্মী লরা লুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেন, গাজার শরণার্থী পরিচয়ে কয়েকজন ফিলিস্তিনি সান ফ্রান্সিসকো ও হিউস্টন হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন। তিনি মিসৌরিতেও নতুন আগমনের অভিযোগ তোলেন। লুমারের এই মন্তব্যে কিছু রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ও সিনেটরের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। টেক্সাসের কংগ্রেসম্যান চিপ রয় এ বিষয়ে অনুসন্ধানের আশ্বাস দেন, আর ফ্লোরিডার র‌্যান্ডি ফাইন একে ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ বলে মন্তব্য করেন।

লুমার আরও অভিযোগ করেন, দাতব্য সংস্থা হিল প্যালেস্টাইন গাজার গুরুতর আহত শিশুদের যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসার জন্য আনতে সহায়তা করছে, যা তিনি সরাসরি ‘সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয়’ হিসেবে অভিহিত করেন। যদিও তার এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আকস্মিক এই সিদ্ধান্তে চিকিৎসা ও মানবিক কারণে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী গাজার বহু বাসিন্দা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ইতোমধ্যেই কয়েক লাখ ছাড়িয়েছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ভিসা স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।