কালীগঞ্জে টিআর ও কাবিটার ১১ প্রকল্পের ১৪ লাখ টাকার বরাদ্দ ফেরত

মোঃ আল-আমিন দেওয়ান; কালীগঞ্জ, গাজীপুর | প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
কালীগঞ্জে টিআর ও কাবিটার ১১ প্রকল্পের ১৪ লাখ টাকার বরাদ্দ ফেরত
গাজীপুরের কালীগঞ্জে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় বক্তারপুর, জাঙ্গালিয়া, নাগরী, মোক্তারপুর, বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ পৌরসভায় ১১টি প্রকল্পের জন্য ১৪ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। উক্ত প্রকল্পের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন না হওয়ায় ইতিমধ্যে সরকারি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ১০ লাখ ৮২ হাজার টাকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি অর্থ ফেরতের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতি ও সম্পাদককে পত্র প্রেরণ করেছেন উপজেলা প্রশাসন। রবিবার বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, টিআর কর্মসূচির ১ম ও ২য় পর্যায়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার একটি প্রকল্প থেকে ৬০ হাজার টাকা, বক্তারপুর ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে ৬২ হাজার ৫০০ টাকা এবং নাগরী ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে ২ লাখ টাকা দুইটি প্রকল্প থেকে ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা। টিআর কর্মসূচির ৩য় পর্যায়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার দুটি প্রকল্প থেকে ২ লাখ টাকা, মোক্তারপুর ইউনিয়নের দুটি প্রকল্প থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে ৬০ হাজার টাকা এবং নাগরী ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ফেরত আনা হয় যার পরিমাণ ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। টিআর কর্মসূচির ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ের ৯টি প্রকল্পের সর্বমোট ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা ফেরত আনা হয়েছে। অন্যদিকে, কাবিটা কর্মসূচির আওতায় ১ম ও ২য় পর্যায়ে জাংগালিয়া ইউনিয়নের একটি প্রকল্প থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও একই ইউনিয়নের ৩য় পর্যায় একটি প্রকল্প থেকে ২ লাখ টাকা। কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুটি প্রকল্প থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে টিআর কর্মসূচির ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ের ৯টি ও কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুটি মোট ১১টি প্রকল্পের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন না হওয়ায় টিআর কর্মসূচির ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ের সর্বমোট ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা ও কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুটি প্রকল্প থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা সর্বমোট ১৪ লাখ টাপকা ফেরত আনা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত অর্থ বছরে কালীগঞ্জে টিআর কর্মসূচির আওতায় ৬০টি এবং কাবিটা কর্মসূচির আওতায় ৭৭টি প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে টিআর কর্মসূচির ১১টি প্রকল্পের মধ্যে ৬টির কাজ ৩০ জুনের মধ্যে সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি এবং ৩টির কাজ একেবারেই শুরু হয়নি। একইভাবে, কাবিটা কর্মসূচির আওতায়ও দুটি প্রকল্পে কোনো কাজ শুরু করা যায়নি। ঐ প্রকল্পের ১০ লাখ ৮২ হাজার টাকা ইতিমধ্যে সরকারি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। বাকী ফেরত পাওয়া গেলে জমা দেওয়া হবে। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন, গত অর্থবছরে কালীগঞ্জে “টিআর ও কাবিটা কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দ পাওয়া প্রকল্প পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিদর্শনকালে দেখা যায় ১১টি প্রকল্পের ছয়টিতে আংশিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি পাঁচটিতে নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করা হয়নি। যারা প্রথম দফায় অগ্রিম চেক নিয়েও প্রকল্পের কাজ সময়মতো শুরু করতে পারেনি বা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করেননি এবং যে প্রকল্পে নানা অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে তাদেরকে দ্বিতীয় দফায় আর কোনো চেক প্রদান করা হয়নি। আর যাদের চেক প্রদান করা হয়েছে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ১০ লাখ ৮২ হাজার টাকা সরকারি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ৩ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতি ও সম্পাদককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই অর্থ ফেরত পাওয়া গেলে সরকারি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে পাঠানো হবে। স্থাণীয়রা জানান, কালীগঞ্জে ইতিহাসে প্রথম প্রকল্পের কাজ না করায় বরাদ্দকৃত টাকা সরকারের কোষাগারে ফেরত যাওয়া নজিরবীহিন ঘটনা। প্রশাসনের যথাযথ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করে প্রশাসনকে সাধুবাদ জানান।
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে