দেশে চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলে এবার প্রথমবারের মতো শুরু হতে যাচ্ছে তুলা চাষ। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে উপজেলার সাইটুলা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে এ চাষ শুরু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এ অঞ্চলে তুলা চাষের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রবিবার বিকেলে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল শ্রীমঙ্গলে এসে সাইটুলা গ্রামে প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন করেন। স্থানীয় কৃষক রাজকুমার কুর্মীর ৩০ শতক জমিতে এই প্রদর্শনী প্লট তৈরি করে তুলা চাষ করা হবে।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল আমিন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের উপ-পরিচালক (সদর দপ্তর) মো. কুতুব উদ্দিন, ঢাকা জোনের সিসিডিও এস এম আব্দুল বাতেন, গবেষণা ও প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রকল্পের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ড. একেএম হারুন অর রশীদ, শ্রীমঙ্গলের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুকুর রহমান, ফরহাদ তারেক প্রমুখ।
স্থানীয় কৃষক রাজকুমার কুর্মী জানান, তিনি প্রথমবারের মতো তার নিজস্ব জমিতে তুলা চাষ করতে যাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিস ও তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর জন্য বোর্ডের পক্ষ থেকে তাকে উন্নতমানের তুলার বীজ ও সার প্রণোদনা হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলে প্রথমবারের মতো তুলা চাষ শুরু হতে যাচ্ছে। আমরা কৃষক রাজকুমার কুর্মীকে বীজ ও সার প্রণোদনা দিয়েছি। এটি সফল হলে ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে তুলা চাষের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্রীমঙ্গলের মাটি ও আবহাওয়া তুলা চাষের জন্য বেশ উপযোগী হতে পারে। দেশে পোশাক শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে তুলার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। অথচ বর্তমানে তুলার চাহিদার সিংহভাগই আমদানি করে মেটাতে হয়। এ পরিস্থিতিতে দেশের অভ্যন্তরে তুলা উৎপাদন বাড়াতে পারলে একদিকে কৃষক উপকৃত হবে, অন্যদিকে বৈদেশিক মদ্রা সাশ্রয় হবে।
প্রথমবারের মতো শ্রীমঙ্গলে তুলা চাষের এই উদ্যোগকে স্থানীয় কৃষকরা স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে শ্রীমঙ্গলসহ মৌলভীবাজার জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও তুলা চাষের বিস্তার ঘটতে পারে।