আসন্ন জাতীয় নির্বাচন: নতুন কেন্দ্র নয়, সমন্বয়েই সমাধান খুঁজছে নির্বাচন কমিশন

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতির চিত্র তুলে ধরেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, এবার নতুন কোনো ভোটকেন্দ্র যুক্ত করা হবে না। তবে বিদ্যমান কেন্দ্র ও বুথ সংখ্যা সমন্বয়ের মাধ্যমে ভোটারদের চাপ মোকাবিলা করার পরিকল্পনা করছে ইসি। একইসঙ্গে সীমানা নির্ধারণ, এনআইডি সংশোধন, ভোটার নিবন্ধন ও রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত নানা প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলছে।

সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। খসড়া ইতিমধ্যে কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে এবং চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এটি প্রকাশ করা হবে।

আখতার আহমেদ জানান, নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ থেকে মোট ৮২টি আপত্তি এসেছে। এসব আপত্তির শুনানি শুরু হবে শনিবার (২৪ আগস্ট) এবং একটানা চার দিন চলবে। শুনানি শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।

সচিব বলেন, এনআইডি সংশোধনের জন্য যে আবেদনগুলো প্রাথমিকভাবে বাতিল হয়েছে, সেগুলো পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে এমন আপিলের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। ডাটা এন্ট্রির মান উন্নত করা গেলে আপত্তির সংখ্যা আরও কমবে বলে আশা করছে কমিশন। এছাড়া ২০০৮ সাল থেকে শুরু হওয়া ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ার যেসব ফরম এখনও স্ক্যান করা হয়নি, সেগুলো স্ক্যান করে কমিশনের পোর্টালে আপলোড করার কাজ চলছে। এতে তথ্যভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হবে।

ভোটকেন্দ্র বাড়ানো হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, “ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হবে না। তবে কেন্দ্রগুলোর ভেতরে বুথ সংখ্যা যৌক্তিকভাবে সমন্বয় করা হবে। বর্তমানে প্রতি ৫০০ ভোটারের জন্য একটি বুথ রাখা হয়, যা ভবিষ্যতে ৬০০ করা হতে পারে। এতে নতুন কেন্দ্র না খুলেও ভোটারদের চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হবে।”

২২টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আবেদন মাঠপর্যায়ে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানান সচিব। যেসব আবেদন বাতিল বা অগ্রহণযোগ্য হয়েছে, তাদের লিখিতভাবে জানানো হচ্ছে। কোন শর্ত পূরণ না হওয়ায় আবেদন বাতিল হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দেওয়া হবে।

নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ আছে কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, “এই মুহূর্তে কোনো উদ্বেগের কারণ নেই। সবাই তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছে। ইসি নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা গুছিয়ে নিচ্ছে, মাঠ প্রশাসন তাদের এলাকায় কাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও নিজ নিজ দায়িত্বে রয়েছে। আগাম প্রস্তুতি নেওয়াই মূল লক্ষ্য, যেন শেষ মুহূর্তে হুড়োহুড়ি না হয়।”