ধানমন্ডির ৩০০ কোটি টাকার পরিত্যক্ত সম্পত্তি নিয়ে স্থিতাবস্থা জারি করল হাইকোর্ট

রাজধানীর ধানমন্ডি ২ নম্বর রোডের প্রায় ৩০০ কোটি টাকার মূল্যমানের আলোচিত ২৯ নম্বর বাড়ি নিয়ে নতুন করে আইনি জটিলতা দেখা দিয়েছে। বাড়িটি কাউকে বরাদ্দ দেওয়া বা সেখানে কোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কেন এই সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও বরাদ্দ অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং জনগণের জন্য সংরক্ষণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

সোমবার (১৮ আগস্ট) বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমদের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। শুনানিতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার কাজী মাইনুল হাসান।

এই সম্পত্তিকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলমান। ১৯৭২ সালে বাড়ির মালিক দেশ ত্যাগ করলে সরকার বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে দখল নেয়। পরবর্তী সময়ে তোয়াব খান, আবেদ খানসহ কয়েকজন উত্তরাধিকার দাবি করে ১৯৮৯ সালে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে মামলা দায়ের করেন। কাগজপত্র ও সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যালোচনা করে আদালত সরকারের পক্ষে রায় দেন।

কিন্তু একই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে এস নেহাল আহমেদ ১৯৯৬ সালে নতুন করে মামলা করেন। সেখানে যথাযথ প্রমাণ ও সরকারি পক্ষের অংশগ্রহণ ছাড়াই তার পক্ষে রায় যায়। পরে তিনি ওই রায় বাস্তবায়নের জন্য হাইকোর্টে দুটি রিট করেন।

অন্যদিকে, ২০১৫ সালে সাংবাদিক আবেদ খানও মালিকানা দাবি করে হাইকোর্টে রিট করেন। তবে আগের আদালতের রায় গোপন করে আবেদন করায় আদালত তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর আগে ২০২২ সালের নভেম্বরে ধানমন্ডির এই বাড়িটি সরকারের বলে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান জানান, প্রয়োজনীয় নথি, সাক্ষ্য ও নিবন্ধন দপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী বাড়িটি বৈধভাবেই সরকার দখল ও নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। তবু পরবর্তী সময়ে একাধিক মামলা ও রিটের কারণে বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে।

হাইকোর্টের সর্বশেষ স্থিতাবস্থার এই নির্দেশে স্পষ্ট হলো, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সম্পত্তি বরাদ্দ বা উন্নয়ন কাজ এগোবে না।