আমরা ত্রাণ চাই না-ভাত চাই না, শুধু টেকসহ বেড়িবাঁধ চাই। এবারেও বেড়িবাঁধ ভাঙলে ডুবে মরতে হবে" এমন আশঙ্কায় খুলনার পাইকগাছায় টেকসহ বেড়িবাঁধের দাবিতে এলাকাবাসী আকুতিসহ মানববন্ধন করেছে।
মঙ্গলবার উপজেলার দ্বীপবেষ্টিত দেলুটি'র ২২নং পোল্ডারের কালীনগর কবিরাজ বাড়ীর কাছে ভদ্রা নদী'র ভাঙনকূলে স্কল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ হাজারো নারী-পুরুষ মানববন্ধনে যোগ দিয়ে পোল্ডার রক্ষায় দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ মেরামতের দাবি করেন। মানববন্ধনে বক্তারা পানিউন্নন বোর্ডের সমালোচনা করে জানান, কালীনগরের কবিরাজ বাড়ীর কাছে নদী ভাঙনে প্রায় ৪শ মিটার বেড়িবাঁধ এখন হুমকির মুখে পড়েছে। ভাঙন অংশে গত বছরে পাউবো'র মেরামত করা জিওব্যাগ নদীতে ধ্বসে পড়লে তা আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে পানির ঢেউয়ে-ঢেউয়ে এ অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের মত এ বছরেও বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনে পোল্ডার প্লাবিত হলে চলতি রোপা আমনসহ ঘরবাড়ী, রাস্তাঘাট তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটবে। এতে ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ ভীষন বিপদে পড়বে। বক্তারা আরোও বলেন, গত ২০ বছরে কালীনগরে ভদ্রা নদী ভাঙনে এ পর্যন্ত আড়াই হাজার বিঘা ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। তিন বার বিকল্প বাঁধ দেওয়া হলেও ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয়নি। ফলে অনেক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ পাউবো কর্তৃপক্ষ নদী শাসন না করে মানুষের জমি নষ্ট করে অপরিকল্পিত ভাবে বাঁধ নির্মাণ করলে তা টেকসই হচ্ছে না। এতে সরকারি অর্থের অপচয় ঘটছে। দেলুটি ইউপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজের সভাপতিত্বে ও ইউপি সদস্য পলাশ কান্তি রায়ের সঞ্চালনায় এ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন দেলুটির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সমর কান্তি হালদার, ফুলবাড়ী সমবায় সমিতি লিঃ সভাপতি দ্বীজেন্দ্র নাথ মন্ডল, ব্যবসায়ী মোস্তফা সরদার, প্রধান শিক্ষক সুব্রত সানা, অবঃ শিক্ষক শ্যামল কান্তি রায়, প্রভাষক কল্যান মন্ডল, সন্তোষ কুমার গাইন, উৎপালেন্দু রায়, শিমুল মন্ডল, মিহির কান্তি রায়, শিশির সরকার, ইউপি সদস্য বদিয়ার রহমান, রাম টিকাদার, মেরী রানী, রিংকু রায়, মালতী মন্ডল, শিক্ষার্থী প্রিয়ংকা, তৃনা সহ কালিনগর কলেজ, দারুন মল্লিক ডিএইচকে ও হাটবাড়ী মাধ্যমিক সহ উদয়ন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসুচিতে অংশগ্রহণ ও বক্তব্য রাখেন। এলাকাবাসী অভিযোগের বিষয়ে পানিউন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, কালীনগরে বেড়িবাঁধের ফাটল ও ভাঙন রোধে ঠিকাদার জরুরী ভিত্তিতে কাজ শুরু করবেন।
তিনি আরোও জানান, পোল্ডারের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য একটি বড় পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ঘুর্নিঝড় রেমালের তান্ডবে ২২নং পোল্ডারে তেলিখালী ও পরবর্তীতে কালীনগরে বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি,বাড়ীঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হয়ে মানবিক বিপর্যয় ঘটে। ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজ ও সদস্য পলাশ রায় বুধবার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড আজ থেকে কাজ শুরু করছে বলে শুনছে, তবে কি ধরনের বাঁধ হচ্ছে তা জানেন না।