কৃষকদল নেতার জরিমানা

চাটমোহরে দুধ প্রক্রিয়াকরণের কথিত চিলিং সেন্টারে অভিযান

এফএনএস (হেলালুর রহমান জুয়েল; চাটমোহর, পাবনা) : | প্রকাশ: ২০ আগস্ট, ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম
চাটমোহরে দুধ প্রক্রিয়াকরণের কথিত চিলিং সেন্টারে অভিযান

পাবনার চাটমোহরে এবার সেই কৃষকদল নেতার দুধ প্রক্রিয়াকরণের কথিত চিলিং সেন্টারে অভিয়ান পরিচালনা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী। গতকাল বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের নটাবাড়িয়া গ্রামে বিলচলন ইউনিয়ন কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোমিনের মালিকানাধিন চিলিং সেন্টারে অভিযান চালান তিনি। এসময় ওই সেন্টারের সরকারি কোন অনুমোদন বা লাইসেন্স না থাকায় কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোমিনকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইসাথে ভবিষ্যতে এই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করবে মর্মে কৃষকদলের ওই নেতা মুচলেকা প্রদান করেন। এসময় উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর মোঃ আসলাম হোসেন ও থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও মুসা নাসের চৌধুরী জানান,ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। 

এরআগে গত সোমবার (১৮ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে কৃষকদল নেতা আব্দুল মোমিনের মালিকানাধীন ভেজাল দুধ তৈরির ওই চিলিং সেন্টারে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল দুধ,ডিটারজেন,কেমিক্যাল,সয়াবিন তেলসহ ভেজাল দুধ তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুসা নাসের চৌধুরী। এ সময় নকল দুধ তৈরির কারবারি বিলচলন ইউনিয়ন কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোমিন ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যান। গভীর রাত পর্যন্ত চলা এই অভিযানে থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা অংশ নেয়।

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,দীর্ঘদিন ধরে সবার অগোচরে উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের নটাবাড়িয়া বিশিপাড়া এলাকায় বিলচলন ইউনিয়ন কৃষকদলের নেতা তার বাড়ির উল্টোদিকে একটি টিনের ঘর ভাড়া নিয়ে সয়াবিন তেল,কেমিক্যালসহ নানা উপকরণ দিয়ে নকল দুধ তৈরি করে আসছিলেন। প্রতিদিন অর্ধশতাধিক মণ ভেজাল দুধ তৈরি করে সে উপজেলার বিভিন্ন দুধসংগ্রহ কেন্দ্রে বিক্রি করতো। বিষয়টি এলাকার অনেকেই জানার পরেও প্রভাবশালী ও দলীয় পরিচয়ের কারণে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি। 

এ বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুসা নাসের চৌধুরী পুলিশ ও আনসার সদস্যের নিয়ে সোমবার রাত ৯টার দিকে আব্দুল মোমিনের সেই নকল দুধের কারখানায় অভিযান চালান। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান আব্দুল মোমিন ও তার সহযোগিরা। এ সময় ক্যানভর্তি প্রায় ২০ মণ নকল দুধ,কয়েক ড্রাম সয়াবিন তেল,কেমিক্যাল,মিক্সার গ্রাইন্ডারসহ বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।  কিন্তু থানা পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একাধিক সূত্র জানায়,অভিযুক্ত আঃ মোমিনকে গভীর রাতে চাটমোহর থানায় দেখা গেছে। 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কৃষকদল নেতা আব্দুল মোমিনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক লিটন বিশ্বাস জানান,এমন ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না, পরে জেনেছি। অভিযোগ সত্য হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।।

এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন,‘ইউএনও মহোদয় যেহেতু এসকল দ্রব্য আটক করেছে,উনি যেহেতু নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, সেহেতু পরবর্তী ব্যবস্থা উনিই নিতে পারেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী বলেন,আজকে ফের অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সে আর এমন অপরাধ করবেনা মর্মে মুচলেকা দিয়েছেন। যদি আবারো এমন ঘটনায় সে সম্পৃক্ত হয়,তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে