সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটে ৪২ জনের নাম দুদকের তালিকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২১ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম
সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটে ৪২ জনের নাম দুদকের তালিকায়

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ এলাকায় অবৈধভাবে সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় বড় ধরনের অনিয়ম ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান শেষে কমিশন ৪২ জনের নাম চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ও কর্মী রয়েছেন।

দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম গত ১৩ আগস্ট ভোলাগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালায়। এর আগে ১০ আগস্ট প্রায় ১০ লাখ ঘনফুট পাথর চুরির ঘটনা ধরা পড়ে। দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, এর মধ্যে অন্তত আড়াই লাখ ঘনফুট ছিল অতিমূল্যবান সাদাপাথর। শুধু গত এক বছরেই এই এলাকায় প্রায় ৪০ লাখ ঘনফুট পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন হয়েছে।

তালিকাভুক্তদের মধ্যে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ বিএনপির মোট ২০ জন নেতাকর্মীর নাম রয়েছে। এছাড়া কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাতজন, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ফকরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীনসহ দুইজন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুই নেতার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে স্থানীয় আরও ১১ জনকে এ চক্রের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুদক।

দুদকের অনুসন্ধানে শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্ব নয়, খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলার প্রমাণও উঠে এসেছে। দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় দ্রুত কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এর ভিত্তিতেই পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুদকের তালিকা প্রকাশের পর সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে দুদক বলছে, যাচাই-বাছাই শেষে আরও কয়েকজনের নাম তালিকায় যুক্ত হতে পারে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে