সিলেটের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট সাদাপাথরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাথর লুটপাটের ঘটনায় রাজনৈতিক নেতাদের নাম জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণার অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মঙ্গলবার পৃথক সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, পাথর লুটে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, বরং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দলীয় নেতাদের নাম প্রচার করা হচ্ছে।
জামায়াতের সংবাদ সম্মেলন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহানগর আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে দুদকের বরাত দিয়ে তার নাম ও জেলা সেক্রেটারি মোঃ জয়নাল আবেদীনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যা “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।” তিনি অভিযোগ করেন, “এই প্রতিবেদন প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার অপচেষ্টা এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।”
ফখরুল ইসলাম জানান, সরকারী ব্যবস্থাপনায় বৈধভাবে কোয়ারি খোলার দাবিতে পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অথচ এ বক্তব্যের সঙ্গে পাথর লুটের কোনো সম্পর্ক নেই।
তিনি আরও বলেন, “আদর্শিক সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে অতীতেও জামায়াতের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, ইতিহাস সাক্ষী-সব ষড়যন্ত্রই ব্যর্থ হয়েছে। এবারও ইনশাআল্লাহ ব্যর্থ হবে।”
জামায়াত নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত পাথর লুটকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার জন্য এবং নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি থেকে রক্ষা করতে। একইসাথে দুদক আসলেই এমন কোনো রিপোর্ট দিয়েছে কিনা, তা পরিষ্কার করতে হবে; না হলে দুদক ও সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
এনসিপির সংবাদ সম্মেলন
অন্যদিকে, সিলেট প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা ও মহানগর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র নেতারা একই অভিযোগ তুলেছেন। তারা বলেন, সদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় এনসিপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নন। অথচ কিছু গণমাধ্যমে জেলা প্রধান সমন্বয়ক নাজিম উদ্দীন সাহান ও মহানগর সমন্বয়ক আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যা “ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যমূলক ও দুঃখজনক।”
এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, দলটি একটি নীতিনিষ্ঠ, গণমুখী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম, যা দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে কাজ করছে। সংবাদ সম্মেলনে তারা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন-
১. বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
২. যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না।
৩. এনসিপি সম্পর্কিত সংবাদ প্রকাশে নিরপেক্ষতা ও সাংবাদিকতার মৌলনীতি মানতে হবে।
তারা আরও সতর্ক করেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের মিথ্যা সংবাদ প্রচার অব্যাহত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান
উভয় দলের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, গণমাধ্যমকে বিভ্রান্তিকর সংবাদ এড়িয়ে প্রকৃত সত্য উদঘাটনে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। একইসাথে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা বন্ধে পেশাদার সাংবাদিকতার নীতি মেনে চলার আহ্বান জানান তারা।