বিরল খনিজ ও চুম্বকের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, চীন যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ চুম্বক সরবরাহ না করে, তবে তাদের পণ্যে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “চীন যদি আমাদের চুম্বক না দেয়, তবে আমাদের বাধ্য হয়ে ২০০ শতাংশ শুল্ক বসাতে হবে বা এ ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।”
বৈশ্বিক চুম্বক বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশ চীনের নিয়ন্ত্রণে। এই উপাদান সেমিকন্ডাক্টর চিপ, স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্যে অপরিহার্য। চলতি বছরের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিলে পাল্টা জবাব হিসেবে চীন বেশ কয়েকটি বিরল খনিজ ও চুম্বক রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে।
ট্রাম্পের মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ চিপ নির্মাতা ইন্টেল করপোরেশনে ১০ শতাংশ শেয়ার নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বিরল খনিজ আমদানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, ফলে এই কাঁচামালের সরবরাহ ব্যাহত হলে চিপ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে চীনের রপ্তানি প্রবণতা উল্টো চিত্র দেখাচ্ছে। চীনা কাস্টমসের তথ্যমতে, গত জুলাই মাসে দেশটির বিরল খনিজের রপ্তানি জুনের তুলনায় ৪ হাজার ৭০০ টনের বেশি বেড়েছে।
বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য দ্বন্দ্ব কিছুটা প্রশমিত হওয়ার ইঙ্গিত মিললেও ট্রাম্পের নতুন শুল্ক হুমকি পরিস্থিতিকে আবারও জটিল করে তুলেছে। সম্প্রতি তিনি এক নির্বাহী আদেশে চীনা পণ্যে শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়িয়েছেন। এ আদেশ কার্যকর না হলে শুল্কের হার ১৪৫ শতাংশে পৌঁছাত।
এর আগে গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একটি সমঝোতায় পৌঁছায়। সেই চুক্তি অনুযায়ী, শুল্ক হার ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে আনার সিদ্ধান্ত হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, চুম্বক ও বিরল খনিজকে কেন্দ্র করে এ দ্বন্দ্ব কেবল বাণিজ্য যুদ্ধেই সীমাবদ্ধ নয়; প্রযুক্তি ও ভূ-রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণের লড়াইও এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে।