আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা ইতিমধ্যেই চরমে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট চৌধুরী ভবনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, ২৮টি পদের বিপরীতে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নারী প্রার্থী রয়েছেন ৬২ জন।
প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া ১০ জন প্রার্থী আপিল না করায় এবং ২৮ জন প্রার্থী স্বেচ্ছায় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় শেষ পর্যন্ত ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন।
তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম-রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী লড়বেন।
সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সদস্য পদে। মোট ২১৭ জন প্রার্থী এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ডাকসুর এবারের নির্বাচনে নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৬২। তাঁদের মধ্যে ভিপি পদে ৫ জন, জিএস পদে ১ জন, এজিএস পদে ৪ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ২ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১ জন, কমনরুম-রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৯ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ৩ জন, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে ২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৩ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ২ জন, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে ৩ জন এবং সদস্য পদে ২৫ জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, *“আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর আস্থা রাখছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাসাধ্য প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে যেমন উৎসাহ রয়েছে, তেমনি ভোটারদের মধ্যেও অংশগ্রহণের ব্যাপারে বিপুল আগ্রহ লক্ষ্য করেছি। এই উৎসাহ, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ থাকলে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”*
ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, *“আমরা প্রতিটি কেন্দ্র সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি এবং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করেছি। আপাতত আট কেন্দ্রেই ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রয়োজন মনে হলে নতুন কেন্দ্র স্থাপন করার বিষয়েও ভাবা যেতে পারে।”*
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ডাকসু নির্বাচন সবসময়ই ছিল শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নেতৃত্ব গঠনের এক অনন্য ক্ষেত্র। এবারের বিপুল সংখ্যক প্রার্থী ও নারী প্রার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নির্বাচনী আমেজকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।