রাজধানীর বিমান দুর্ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মৃত্যু নিয়ে কথা বললেই কলেজের কয়েকজন শিক্ষক অভিভাবকদের “মায়াকান্নার” অভিযোগ তোলেন। নিহত শিক্ষার্থী আছিয়ার মা তামিমা আক্তার প্রশ্ন তুলেছেন, “আমি কি আমার বাচ্চার মৃত্যুর বিচার চাইতে পারব না?”
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবার এ অভিযোগ করে। তারা মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
কোচিংয়ের জোরাজুরি আর মৃত্যুর অভিযোগ
তামিমা আক্তার অভিযোগ করেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের জোর করে কোচিং করতে বাধ্য করত। কোচিংয়ের জন্য আটকানো অবস্থাতেই দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠানটিতে নানা অনিয়ম চলছে।
তার ভাষায়, “মাইলস্টোনের মালিক ৮০ জন শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে পরীক্ষা দেয়ায়, আর বাকি ২০ জনকে অন্য একটি বেনামী প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে বড় অংকের টাকা নিয়ে পরীক্ষা দেয়ায়।”
নিহতদের পরিবারকে অবহেলা
অভিভাবকদের অভিযোগ, কলেজের তিন শিক্ষক মারা যাওয়ার পর তাদের পরিবারকে নিয়ে মিটিং করলেও শিক্ষার্থীদের পরিবারের বিষয়ে কোনো আলোচনা করেনি মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ। এতে নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবার নিজেদের প্রতি অবহেলার অভিযোগ করেছেন।
অভিভাবকদের বক্তব্য
• নিহত শিক্ষার্থী ফাতেমার মামা লিয়ন মীর অভিযোগ করেন, সেদিন কোচিং ব্যবসার জন্য শিক্ষার্থীদের আটকেই রাখা হয়েছিল। নাজিয়াকে জোর করে আটকানো হয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
• ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদের বাবা রুবেল মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এতগুলো বাচ্চা মারা গেল, যেন কিছুই হয়নি।”
• নিহত শিক্ষার্থী নাজিয়া ও নাফির বাবা আশরাফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, দুর্ঘটনার দিন কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের পরিবহন ব্যবহার করেনি। তিনি নিহত শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রীয় শহীদ মর্যাদা এবং দুর্ঘটনাস্থলে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের দাবি জানান।
অভিভাবকদের মূল দাবি
নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবার মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে ৯ দফা দাবি জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
• শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার,
• জোরপূর্বক কোচিং ব্যবসা বন্ধ,
• নিহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও মর্যাদা,
• দুর্ঘটনাস্থলে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ।