ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় আলোচিত হয়েছেন ডাকসু নির্বাচনের স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদ জালাল। তাঁর বিরুদ্ধে রুমমেটকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) মধ্যরাতে হলে ৪৬২ নম্বর কক্ষে। এ ঘটনার পরপরই তাঁকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী মো. রবিউল হক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। সহপাঠীরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিউল জানান, রাত সাড়ে বারোটার দিকে জালাল কক্ষে প্রবেশ করে লাইট অন করেন এবং উচ্চস্বরে শব্দ করতে থাকেন। এতে ঘুম ভেঙে গেলে তিনি আপত্তি জানালে জালাল উত্তেজিত হয়ে তাঁকে বহিরাগত বলে গালাগাল করেন এবং পরে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। রবিউলের দাবি, আগেও জালালের কাছ থেকে তিনি হুমকি পেয়েছেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত জালাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পাল্টা দাবি করেছেন, তাঁকেই নাকি কক্ষে মারধর করা হয়েছে। নিজের শরীরের ক্ষতচিহ্নের ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, হল থেকে অবৈধ শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার দাবিতে পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দীন আহমদ এবং হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছান। প্রাধ্যক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে জালালকে হল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, *“এ ধরনের নৃশংস কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে মুহসীন হল থেকে বহিষ্কার করা হলো। তাঁর ছাত্রত্ব বাতিলের প্রক্রিয়াও শুরু হবে।”*
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরে তাঁকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, *“ঘটনার তদন্ত চলছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে এ ঘটনার কোনো প্রভাব পড়বে না।”*
এদিকে হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষার্থী প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগ তুলে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, জালালের বিরুদ্ধে পূর্বেও একই ধরনের হামলার অভিযোগ করা হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বর্তমানে আহত রবিউল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্তসাপেক্ষে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।