সিঙ্গাপুর-ফ্রান্সসহ আরও চার দেশে প্রবাসীদের এনআইডি সেবা চালুর অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৭ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম
সিঙ্গাপুর-ফ্রান্সসহ আরও চার দেশে প্রবাসীদের এনআইডি সেবা চালুর অনুমতি

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবার সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, স্পেন ও বাহরাইনে প্রবাসীরা নিজ দেশে না ফিরে সেখানেই ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) গ্রহণের সুযোগ পাবেন।

বুধবার (২৭ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতির পর ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে এসব দেশে কার্যক্রম শুরু করার অনুমোদন পেয়েছে। এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, ওমান, মালদ্বীপ, জর্ডান ও দক্ষিণ আফ্রিকায় একই কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি পেয়েছিল কমিশন। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপানসহ দশটি দেশে ১৭টি স্টেশনে প্রবাসীদের এনআইডি কার্যক্রম চলছে। এসব দেশ থেকে প্রায় ৫০ হাজার প্রবাসী ইতোমধ্যে ভোটার হয়ে এনআইডি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

ইসির নতুন উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি, নিউ ইয়র্ক, মায়ামি ও লস অ্যাঞ্জেলেসে এনআইডি সেবা চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরে সেখানে কারিগরি টিম গিয়ে সরঞ্জাম স্থাপন, লোকবল প্রশিক্ষণ এবং নিবন্ধন কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক ট্রায়াল সম্পন্ন করবে।

ইসি সচিবালয়ের নির্দেশনায় ১৪ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর চারটি কারিগরি টিম যুক্তরাষ্ট্রে যাবে। এরপর ২১ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর প্রশাসনিক টিমগুলো দায়িত্ব গ্রহণ করবে। নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিতে কাজ করবে ইসি সচিব আখতার আহমদের নেতৃত্বাধীন টিম, আর মায়ামি ও লস অ্যাঞ্জেলেসে কার্যক্রম তদারকি করবেন এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর।

প্রবাসীরা অনলাইনে পূরণকৃত ফরম-২(ক), বৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বাংলাদেশি পাসপোর্ট, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন, এনআইডিধারী তিন নাগরিকের প্রত্যয়নপত্র এবং পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি সংশ্লিষ্ট দূতাবাস বা কনসুলেটের নিবন্ধন কেন্দ্রে জমা দিয়ে ভোটার হতে পারবেন। বিশেষ কিছু উপজেলার প্রবাসীদের জন্য শিক্ষা সনদ, পিতা-মাতার এনআইডি, নাগরিকত্ব সনদ, ইউটিলিটি বিলের কপি কিংবা ভাড়াটিয়া হলে ভাড়ার চুক্তিপত্রও জমা দিতে হবে।

সব নথি যাচাই শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং তার এনআইডি ওই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সরবরাহ করা হবে।

২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির সময় থেকেই প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি ওঠে। দীর্ঘদিন নানা জটিলতার পর ২০১৯ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় অনলাইন নিবন্ধন শুরু হলেও কোভিড মহামারীতে কার্যক্রম থমকে যায়। পরে ২০২৩ সালে উদ্যোগ আবারও চালু হলেও রাজনৈতিক পরিবর্তনে তা স্থবির হয়ে পড়ে। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আবারও এ কার্যক্রমে গতি এসেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এই উদ্যোগ নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিল। এতে প্রবাসীরা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত হতে পারবেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে