জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু আজ। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২ এ চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম হবে।
ট্রাইব্যুনালের সূত্রে জানা গেছে, এই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ ২৪ জন এখনও পলাতক। তাদের পক্ষে সরকারের খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, কারাগারে আটক ছয় আসামিকে বৃহস্পতিবার সকালেই প্রিজনভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন—এএসআই আমির হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ।
এর আগে বুধবার (২৭ আগস্ট) চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও তারেক আবদুল্লাহ। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে মামলার অভিযোগ, তদন্ত ও সাক্ষ্যপ্রমাণের সারসংক্ষেপ আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের নথি অনুযায়ী, তদন্ত সংস্থা গত ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল এবং ৬ আগস্ট ৩০ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলায় মোট সাক্ষী রয়েছেন ৬২ জন, যাদের সাক্ষ্যগ্রহণ ধাপে ধাপে সম্পন্ন হবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও আদালতে উপস্থিত থেকে তাদের বক্তব্য রাখেন। এর মধ্যে পলাতক আসামিদের হয়ে রাষ্ট্রনিযুক্ত চার আইনজীবী বিভিন্ন সময়ে শুনানিতে অংশ নেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হওয়ায় এ মামলাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানিয়েছে, সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত পরবর্তী কার্যক্রমের দিন ধার্য করবেন।