নীলফামারীর চারপাশে এখন সোনালী ধানের সবুজের সমারোহ। শরতে চলছে তালপাকা অসহ্য ভ্যাপসা গরম। মাঝে মধ্যে হালকা হাওয়ায় দুলছে দিগন্ত জোড়া আমন ধানের সবুজে সমারোহ ক্ষেত। গোটা জেলায় আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের চাষী আসাদুজ্জামান জানান,এবার আমনের ফলন ভাল হবে। কারণ কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই। ফলে ধানের গাছ সবল হচ্ছে ।
সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের চাষী বাদল ও রবিউল ইসলাম জানান, প্রতি বছর বন্যায় ফসল নষ্ঠ হয়। কোন কোন প্রবল বন্যার কারণে নিচু জমির ফসল পানিতে ডুবে যায়। শেষ সময়ে ওই অবস্থায় ফসল রক্ষা করা সম্ভব হয় না। তবে এ বছর বন্যা নেই। ফসল ভাল হবে এমন আশাবাদী তারা।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের উত্তর সিঙ্গেরগাড়ীর বীরমুক্তিযোদ্ধা কমলা কান্ত রায় জানান,এবার জমিতে চারা রোপন করা হয় সঠিক সময়ে। চারা গাছগুলো বেশ সবল হয়েছে। আশা করি ফলনও ভাল হবে।
ডিমলা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক লাজু হোসেন বলেন, চারা গাছ দেখেই বুঝা যায় ফসল কেমন হবে। এবারে ধান গাছগুলো সবল হয়েছে।
ডোমার উপজেলার কৃষক ময়নুল ইসলাম জানান, গত বছরের চেয়ে এবছর ফলন আরো ভাল হবে।
জলঢাকা উপজেলার কৃষক ইসমাঈল হোসেন বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। চারাগাছ এখন সবল হচ্ছে। থোকা মোটা হচ্ছে। ফলন ভাল হবে আশা করি।
দেখা যায়, এবার আমনের বাম্পার ফলনের চিত্র। গত বছরগুলোতে আমন মৌসুমে ছিল প্রবল বৃষ্টি। ফলে দেখা দিত বন্যা। চারা রোপনের পর ওই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়ায় কৃষকের ফসল পানিতে তলিয়ে গিয়ে নষ্ঠ হয়ে যেত। শেষ সময়ে আর কৃষক ফসল রোপন করতে পারতেন না। ফলে ওই সকল জমিতে পরবর্তী সময়ে অন্য ফসল লাগাতো তারা। কিন্তু এবার কোন ধরনের বন্যা নেই। নেই অন্য কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তাই চারা রোপণের পরই মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি হওয়ায় রোপনকৃত চারা সবল হয়ে উঠছে। আর কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় তা দ্রুত বেড়ে ওঠছে। গোটা জেলায় সবুজে ছেয়ে গেছে আমন ধানের ক্ষেত। আর দিগন্ত জুড়ে সবুজের মাঝেই উঁকি দিচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুবন বলেন, এবার সৈয়দপুরে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮২১০ হেক্টর। অর্জিত ৮২১২ হেক্টর।
ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান,এবার চলতি রোপা আমন মৌসুমে ২০ হাজার ৯শ ৩৮ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান,এবার লক্ষমাত্রা ১৪ হাজার, ৮শ ৮৫ হেক্টর।
ডোমার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, লক্ষমাত্রা ১৭ হাজার, ৯শ ৩৫ হেক্টর।
জলঢাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এবার
জলঢাকায় আমনের লক্ষমাত্রা ২২ হাজার, ৯শ ২৩ হেক্টর।
নীলফামারী কৃষি বিভাগের উপপরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান এবার জেলায় আমনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ, ১৩ হাজার, ৭শ, ৭২ হেক্টর।