স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনজুড়ে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রাজধানী কিয়েভে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তকাচেঙ্কো। রাত ১১টা (গ্রিনিচ সময় রাত ৮টা) পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলছিল।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়াটার্স।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন শুরুর পর এটি দ্বিতীয় বৃহৎ হামলা। তার ভাষায়, “এটি যুদ্ধ থামাতে আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জবাব।”
মার্কিন বিশেষ দূত কিথ কেলগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “টার্গেট ছিল না সৈন্য বা অস্ত্রভাণ্ডার; বরং আবাসিক এলাকা, বেসামরিক ট্রেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটিশ মিশন কাউন্সিলের অফিস- আর নিরীহ মানুষ।”
হামলায় তুরস্কের একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও আজারবাইজান দূতাবাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। তবে এসব কার্যালয়ে হতাহতের খবর মেলেনি।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো একে সাম্প্রতিক মাসগুলোর অন্যতম বড় আক্রমণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শহরের সব জেলায় ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; আহত হয়েছেন অন্তত ৬৩ জন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সারা দেশে ১৩টি স্থানে রুশ হামলা হয়েছে। জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান উক্রেনেরগো জানিয়েছে, হামলায় জ্বালানি স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফলে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন বলেন, “এ হামলা আরেকটি ভয়াবহ স্মরণ করিয়ে দিল যে রাশিয়া কোনোভাবেই থামছে না। তারা বেসামরিক মানুষ হত্যা করছে, এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দপ্তরকেও টার্গেট করছে।” তিনি জানান, রাশিয়ার বিরুদ্ধে শিগগিরই ১৯তম ধাপের নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এক্স-এ লিখেছেন, “পুতিন শিশু ও বেসামরিক মানুষ হত্যা করছে, শান্তির সম্ভাবনাকে ধ্বংস করছে।”
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, রুশ হামলায় নিক্ষিপ্ত প্রায় ৬০০ ড্রোনের মধ্যে ৫৬৩টিই এবং ৩১টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ২৬টি প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী। অপরদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ইউক্রেনের ১০২টি ড্রোন তারা ধ্বংস করেছে এবং তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল সামরিক শিল্প কারখানা ও বিমানঘাঁটি।
জেলেনস্কি নতুন করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “রাশিয়া আলোচনার টেবিলের বদলে বেছে নিয়েছে ব্যালিস্টিক মিসাইল।”
সূত্র: রয়টার্স