যাত্রাবাড়ী থানার আলোচিত হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার (৩০ আগস্ট) ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিব উল্লাহ পিয়াস জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান আদালতে আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, তদন্তের স্বার্থে আসামিকে হেফাজতে রাখা জরুরি। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা মোবাইল ফোন, সিপিইউ ও আইম্যাক জব্দ করে আইটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। জামিনে মুক্তি পেলে তিনি পলাতক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং তদন্তকাজ বিঘ্নিত হতে পারে।
রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর কাইয়ুম হোসেন নয়ন জামিনের বিরোধিতা করেন। অপরদিকে তৌহিদের আইনজীবী মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম জামিনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে শনিবার দুপুরে তৌহিদ আফ্রিদিকে আদালতে হাজির করা হয়। গত ২৫ আগস্ট তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছিলেন আদালত। এর আগের দিন (২৪ আগস্ট) রোববার রাতে বরিশাল থেকে সিআইডি তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় আনে।
যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. আসাদুল হক বাবু নিহত হন। নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন ওই বছরের ৩০ আগস্ট হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও দেড় শতাধিক ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এই মামলার আসামির তালিকায় ১১ নম্বরে আছেন তৌহিদ আফ্রিদি। তার বাবা মাইটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন সাথীকে একই মামলায় আসামি করা হয়েছে। গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেয়।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তৌহিদ আফ্রিদি উসকানিমূলক বক্তব্য ও প্রচার চালিয়েছিলেন। এসব কার্যক্রমের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলছে বলে দাবি করছে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন এবং মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।