বেগম খালেদা জিয়া দেশে সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু করেন: নার্গিস বেগম

এফএনএস (ফারুক আহমেদ; মেহেরপুর) : | প্রকাশ: ৩০ আগস্ট, ২০২৫, ০৬:১২ পিএম
বেগম খালেদা জিয়া দেশে সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু করেন: নার্গিস বেগম

জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, বিএনপি কোনো সন্ত্রাসী দল নয়। রাতের আঁধারে ক্ষমতা দখল কিংবা ভোট ডাকাতিতে বিএনপি বিশ্বাস করে না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাকশালের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া দেশে সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু করেন। শনিবার সকাল ১১টায় মেহেরপুর কলেজ মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নার্গিস বেগম বলেন, একার শক্তিতে ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করা সম্ভব নয়। ফ্যাসিবাদী শক্তির পেছনে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অশুভ চক্রান্ত কাজ করছে। ছাত্র আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গড়ে ওঠা গণআন্দোলনে কৌশলগত নেতৃত্ব দিয়েছেন তারেক রহমান।

গত ১৬ বছর বাংলাদেশে গণতন্ত্রহীন ও মানবতাহীন একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম ছিল। এই সময় বেগম খালেদা জিয়া দেশ ছেড়ে যাননি। ওয়ান ইলেভেনের সময় তাঁকে বিদেশে যেতে বলা হলেও তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন—“আমার মৃত্যু হলেও আমি এই দেশেই থাকবো।” তারেক রহমানকেও বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।

অন্তর্বতীকালীন সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি চায় স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হোক। তবে সামান্য অসতর্কতা দেশকে আবারও ফ্যাসিবাদের দিকে ঠেলে দিতে পারে। আন্দোলনে ৬ শতাধিক মানুষ শহীদ হয়েছেন। এটি শুধু একটি সংখ্যা নয়, বরং শত শত পরিবারের অশ্রু-দীর্ঘশ্বাস ও একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের প্রতীক।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাআমান উল্লাহ অমান অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনা নিজে বলেছিলেন “শেখের বেটি পালায় না” কিন্তু পরদিনই তিনি গোষ্ঠী-সমেত দেশ থেকে পালিয়ে যান। হাজারো ছাত্র-জনতার হত্যার ভয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে এবং ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হবে।

জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন,তারেক রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ৪৪টি রাজনৈতিক দল জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করতে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন গড়ে ওঠে, সেখানে সব রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ অংশ নেয়। কিন্তু আন্দোলনের শক্তিকে দুর্বল করতে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিভেদ সৃষ্টি করছে। অথচ ফ্যাসিবাদ আজও প্রশাসন ও সমাজের প্রতিটি স্তরে বিদ্যমান।

তিনি নুরুল ইসলাম নূর ও আলী রাশেদের ওপর সামপ্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এখনো বাংলাদেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পায়নি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান এবং মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা তাজ উদ্দিন খান।

কাউন্সিল শেষে জাভেদ মাসুদ মিল্টনকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান,ওমর ফারুক লিটন ও রোমানা মাহমুদেও নাম ঘোষনা করা হয়। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে