আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ০। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে। এর পর অন্তত আরও তিন দফা পরাঘাত (আফটারশক) অনুভূত হয়, যেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নানগারহার ও কুনার প্রদেশ। এসব এলাকায় আহত ১১৫ জনের বেশি মানুষকে ইতিমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বহু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে উদ্ধারকাজ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিছু এলাকায় কেবল আকাশপথে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে, কারণ ভূমিধস ও বন্যায় সড়কপথ বন্ধ হয়ে গেছে।
কুনার প্রদেশে মেডিকেল টিম বহনকারী হেলিকপ্টার ইতিমধ্যে পৌঁছেছে। আহতদের চিকিৎসা ও স্থানান্তরে কাজ করছে সেনা ও স্বেচ্ছাসেবীরা। নানগারহারে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা হাসপাতালে ভিড় জমিয়ে রক্ত দিচ্ছেন আহতদের জীবন বাঁচাতে।
কুনারের এক তালেবান কর্মকর্তা জানান, একটি গ্রামেই ২১ জন নিহত ও অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, অনেক জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, আবার কিছু এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় প্রকৃত পরিস্থিতি জানা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী কাবুলে কয়েক সেকেন্ড ধরে কম্পন অনুভূত হয়। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন টের পাওয়া গেছে।
মানবিক সংস্থাগুলোর প্রতি দ্রুত সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে তালেবান সরকার। কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো দুর্গম হওয়ায় উদ্ধার অভিযান কঠিন হয়ে পড়েছে এবং হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।