নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে রণক্ষেত্র, শ্রমিক-যৌথবাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১

এফএনএস (ওবায়দুল ইসলাম; সৈয়দপুর, নীলফামারী) :
| আপডেট: ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:০০ পিএম | প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০১:১৯ পিএম
নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে রণক্ষেত্র, শ্রমিক-যৌথবাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১

টানা আন্দোলনের জেরে নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) শ্রমিক ও যৌথবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আটজন শ্রমিক। নিহত যুবকের নাম হাবিব ইসলাম (২০)। তিনি ইপিজেডের একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন এবং নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের কাজিরহাট গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে সংঘর্ষ শুরু হলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। টানা চার দিন ধরে শ্রমিকরা আন্দোলনে ছিলেন। তাদের অভিযোগ, নোটিশ ছাড়াই ছাঁটাই, কর্মপরিবেশের অনিয়ম, নারী শ্রমিকদের সঙ্গে অসভ্য আচরণ, বেতন-ভাতা অনিয়ম, প্রমোশনে জটিলতা, শুক্রবারে ডিউটি-ছুটি বিন্যাসের অসঙ্গতি, ওভারটাইম বঞ্চনা এবং গর্ভবতী শ্রমিকদের জন্য কোনো বিশেষ সুবিধা না থাকা—এসব নিয়ে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকে তারা আন্দোলনে নামেন।

কারখানা কর্তৃপক্ষ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার অজুহাতে নোটিশ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। তবে কারখানা বন্ধ হলেও আন্দোলন থামেনি। মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা ইপিজেডের সড়কে অবস্থান নিলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও টিয়ারশেল ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। পরে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলি চালালে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এতে ঘটনাস্থলেই শ্রমিক হাবিব নিহত হন এবং অন্তত আটজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।

নীলফামারী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আবদুর রহিম জানান, নিহত হাবিবকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এ ছাড়া আরও কয়েকজন চিকিৎসাধীন আছেন।

শ্রমিকরা জানান, তারা শান্তিপূর্ণভাবে ২০ থেকে ২৩ দফা দাবি উপস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আলোচনায় না গিয়ে হঠাৎ ছাঁটাই ও কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সংঘর্ষের সময় আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়, সাধারণ মানুষ আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

সংঘর্ষের পর এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দাবি করেছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে