ঝিনাইদহ জেলায় সোনালী আসে কৃষকরা খুশি

এফএনএস (টিপু সুলতান; কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম
ঝিনাইদহ জেলায় সোনালী আসে কৃষকরা খুশি

কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষক-কৃষানীরা পাটের আঁশ ছাড়ানো ও সংরক্ষণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর পাটের উৎপাদন অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে।কৃষকদের মতে, সঠিক সময়ে চাষাবাদ, উপযুক্ত জলবায়ু এবং আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার এর মূল কারণ। এই বছর উর্বর জমিতে পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কৃষকদের উৎপাদনেও যথেষ্ট গতি এসেছে।পাট চাষের জন্য উপযুক্ত জলবায়ু এবং পরিবেশ এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য দারুণ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।এছাড়া পাট কাটার পরই পানিতে জাক দিয়ে ভিজিয়ে সপ্তাহ খানেক পানিতে ডুবিয়ে রাখার পর শুরু হয় পাট গাছ থেকে আঁশ ছাড়ানোর মহাযজ্ঞ। এই প্রক্রিয়া একটি সময় সাপেক্ষ এবং দক্ষতা প্রয়োজনীয় কাজ, যেখানে পাটের আঁশকে পাট গাছ থেকে আলাদা করা হয়। পাটের আশ ছাড়ানো হলেও এর মধ্য দিয়ে কৃষকরা ভালো মুনাফা অর্জন করেন।স্থানীয় কৃষকরা জানান তারা পুরুষ ও মহিলারা একত্রিত হয়ে তাদের কাজ ভাগ করে নেন। কেউ পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজ করেন আবার কেউবা ছাড়ানো আঁশ পানিতে পরিষ্কার করেন। এরপর তা শুকানোর জন্য বিভিন্ন গাছের সাথে বাঁশ অথবা রশি বেঁধে আড়া বানিয়ে রোদে দেন। তারপর ৫ থেকে ৭ দিন শুকানোর পর তা সংরক্ষণ করে কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য নেওয়া হয়, অনেক সময় দেখা যায় পাট কেনার পাইকার বাড়িতে আসেন ক্রয় করার জন্য।এছাড়া পাট গাছের কাঠি (খড়ি) দিয়ে বানানো হয় নানা ধরনের বেড়া, রান্না ঘরের চালা ও রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২১ হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ২২৯ হেক্টর জমিতে। এতে পাট উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার ১১৬ মেট্রিক টন।এ বছর বৃষ্টি ভালো হওয়ায় পানির অভাব হয়নি।আঁশের রং হয়েছে ঝকঝকে সোনালি। বর্তমানে বাজারে মন প্রতি ৩৫০০ থেকে ৩৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জেলা কৃষি উপ-পরিচালক ষষ্টি চন্দ্র বলেন, বৃষ্টিপাতের কারণে পানির ঘাটতি হয়নি।এ কারণে আঁশে এসেছে ঐতিহ্যবাহী সোনালি রং।কৃষকরা এবার বাজারে ভালো দাম পেয়েছেন। এতে আগামী মৌসুমে পাট চাষে আরও আগ্রহী হবেন।

চলতি মৌসুমে কালীগঞ্জ উপজেলায় ৬৬৫ হেক্টর, কোটচাদপুর উপজেলায় ৪৫৪ হেক্টর,মহেশপুর উপজেলায় ৩৮৯০ হেক্টর, সদর উপজেলায় ৪৮১০ হেক্টর, হরিনাকুন্ডু উপজেলায় ২৭১২ হেক্টর শৈলকুপা উপজেলায় ৭৭৯৮ হেক্টর জমিতে এ বছর পাটের আবাদ হয়েছে।২০২৩-২০২৪ মৌসুমে জেলায় পাটের আবাদ হয়েছিল ২২ হাজার ৫২৪ হেক্টর জমিতে। এ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। তন্মধ্যে কালীগঞ্জে ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর,ঝিনাইদহ সদর ৫ হাজার ৭২ হেক্টর,কোটচাঁদপুরে ৬৩৫ হেক্টর, মহেশপুরে ৪ হাজার ২৭৫ হেক্টর, শৈলকুপায় ৮ হাজার ৪২৫ হেক্টর ও হরিণাকুন্ডুুতে ২ হাজার ৫৬৭ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়।ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর পাটের মান খুবই ভালো। পাটের প্রকৃত সোনালি রং এবার দেখা যাচ্ছে ও কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন। পাটের গুণগত মান ভালো হওয়ায় আমরা ভালো দাম দিয়েই কিনছি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে