চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ছিনতাইকারীদের দেশীয় অস্ত্র ও ইটের আঘাতে অটোবাইক চালক শাওন (২১) কে হত্যা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল ও শাওনের টিএনটি এলাকায় ভাড়া বাসায় সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিং কালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মো. রকিব উদ্দিন।
নিহত শাওন মতলব পৌরসভার উত্তর নলুয়া গ্রামের ইকবাল হোসেন সরকারের ছেলে। সে মতলব সদরের টিএন্ডটি রোডে মা রোকসানা বেগমকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতো।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মতলব পৌরসভার উত্তর নলুয়া গ্রামের শাওন (২১) পেশায় একজন অটোবাইক চালক। বুধবার মূলত অটোবাইক চালানোর উদ্দেশ্যেই বাড়ি থেকে বের হয়। রাত নয়টার দিকে মাছুয়াখাল বাজার থেকে যাত্রীবেশে দুষ্কৃতকারীরা তার অটোবাইকে উঠে। অটোবাইকে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে নারায়নপুরের বাদামতলী সড়কের বাগিচাপুর এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে আসে। সেখানে তারা অটোবাইক থামিয়ে তাঁকে দেশীয় অস্ত্র ও ইট দিয়ে মাথা ও বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত জখমে গুরুতর আহত করে। পরে পিক-আপে বেধে তার অটো নিয়ে চলে যাওয়ার সময় তার ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয় যুবদল নেতা মোরশেদ আলম ও উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সাবের সিদ্দিকী তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বিষয়টি মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ সালেহ আহাম্মদকে অবহিত করলে তিনি হাসপাতালে এসে তার দেখাশোনা করেন এবং তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠান । সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ ।
শাওনের মা রোকসানা বেগমের কান্নায় পুরো পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। পুলিশ অফিসারদের ধরে বলেন, “আমার পুতে আমারে নিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতো, আমারে খাওয়াইতো। এখন কে আমারে খাওয়াইবো?”তিনি পুলিশের কাছে তার ছেলেকে যারা মেরেছে তাদের ফাঁসি চান। প্রেস ব্রিফিং কালে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) খায়রুল কবির, অফিসার ইনচার্জ( ওসি) সালেহ আহাম্মদ।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। শাওনের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড মনে হচ্ছে। পুলিশ সুপার মো. রকিব উদ্দিন বলেন, ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত কিছু আলামত আমরা জব্দ করি। ওই আলামতের সূত্র ধরেই আমরা প্রাথমিকভাবে যাদের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা পেয়েছি ওই তিনজনকে আটক করতে পেরেছি । এছাড়া একটা পিক-আপে বেধে অটোবাইকটি নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা সেটাও শনাক্ত করেছি। আমরা অচিরেই তাকেও আটক করতে সক্ষম হবো।