রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ পিয়াসের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধ করতে গত ৫ আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। এরপর ২৮ আগস্ট সকাল ১০টায় সংগঠনটির উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন একদল ব্যক্তি হট্টগোল শুরু করে এবং অতিথিদের মধ্যে অনেককেই বের করে দেওয়ার পাশাপাশি আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান ও সাংবাদিক পান্নাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ এসে ১৬ জনকে আটক করে। এই ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
জামিনের জন্য লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ কামরুল হোসেন ও ইফফাত জাহান রনি, সাংবাদিক পান্নার পক্ষে আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী আদালতে আবেদন করেন। লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে বলা হয়, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৮৭ বছর বয়সে অসুস্থ। আইনি প্রতিনিধি দাবি করেন, “ঘরোয়া পরিবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের ‘মব ভায়োলেন্স’-এর মাধ্যমে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।”
সাংবাদিক পান্নার পক্ষে বলা হয়, “আলোচনা সভার জন্য ডিএমপির অনুমতি ছিল, কিন্তু যারা সভায় ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা নয়, বরং যারা লাঞ্ছিত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।”
শুনানি শেষে আদালত উভয় আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে দেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, “মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি প্রতিহত করতে ‘মঞ্চ ৭১’-এর উদ্যোগে গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে হট্টগোলকারীরা আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং পুলিশ এসে ১৬ জনকে আটক করে। এই ঘটনায় শুক্রবার শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়।”
লতিফ সিদ্দিকী ও পান্না ছাড়া বাকি ১৪ জনের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান, কাজী এ টি এম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মো. তৌছিফুল বারী খান, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহম্মদ আলী ও মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।