দুর্গাপুর চন্ডিগড় ইউপি’তে প্রশাসক অনুপস্থিত, সচিব’র দেখা মেলেনা

এফএনএস (এস.এম রফিকুল ইসলাম; দুর্গাপুর, নেত্রকোনা) : | প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম
দুর্গাপুর চন্ডিগড় ইউপি’তে প্রশাসক অনুপস্থিত, সচিব’র দেখা মেলেনা

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক অনুপস্থিত রয়েছেন টানা ১২ দিন যাবত। তার সঙ্গে সচিবকেও সচরাচর পাওয়া যায় না। ফলে প্রতিদিন ইউনিয়ন পরিষদে বিভিন্ন কাজে আসা সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।

এদিকে প্রশাসক অনুপস্থিত থাকলেও নিয়ম ভেঙে অগ্রিম স্বাক্ষরিত নাগরিকত্ব সনদপত্র বিতরণ করছেন এক উদ্যোক্তা। এতে প্রশ্ন উঠেছে এই সুযোগে তিনি আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন বলেও শুনাযায়।

তথ্য অনুযায়ী, দুর্গাপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা রায়হানুল হক চন্ডিগড় ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বে আছেন। তবে গত ২২ আগস্ট থেকে তিনি অনুপস্থিত। জানা যায়, তিনি ওমরা হজ পালনের উদ্দেশ্যে গেছেন, কিন্তু দায়িত্ব কাউকে হস্তান্তর না করেই। তার অনুপস্থিতিতে উদ্যোক্তা অগ্রিম স্বাক্ষরিত কাগজ ব্যবহার করে নাগরিকত্ব সনদপত্র দিচ্ছেন। অথচ নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রশাসক বা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই স্বাক্ষর করে দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্র ও সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, জন্মনিবন্ধন,ওয়ারিশান সনদসহ নানা জরুরি কাজে মানুষ ইউনিয়ন পরিষদে আসছেন। কিন্তু প্রশাসক বা সচিবকে না পেয়ে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। বুধবার (৩সেপ্টেম\^র) দুপুর দেড়টার দিকে সচিবকে পরিষদে পাওয়া যায়নি। এর আগেও সকালেও তাকে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরিষদে এসে উপস্থিত হন ৩টা ৪ মিনিটে।

সেবা গ্রহীতাদের অভিযোগ নানা প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তারা দায়িত্বশীল কাউকে পাচ্ছেন না। এতে যেন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। আলমপুর গ্রাম থেকে আসা সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, ওয়ারিশান সনদের জন্য তিনি দুই দিন ধরে তার ভাই এসে ঘুরে যাচ্ছেন আজ তিনি আসছেন কিন্তু প্রশাসক ও সচিব কাউকেই পাচ্ছেন না। ফলে সনদ সংগ্রহ করতে পারছেন না।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা দূর থেকে আসি, কিন্তু ঘুরে যেতে হয়। আমাদের দাবি যদি প্রশাসক ও সচিব অনুপস্থিত থাকেন তবে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিয়ে সেবা প্রদান করা হোক।

কথা হয় উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলামের সঙ্গে তিনি বলেন, প্রশাসক অগ্রিম স্বাক্ষর করে রেখে গেছেন। আমি শুধু তারিখ বসিয়ে ও লিখালিখি করে দিচ্ছি। তিনি স্বীকার করেন, সচিবও সচরাচর পরিষদে থাকে না।


প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, প্রশাসক হজে গিয়েছেন। যাওয়ার আগে আমি বলেছিলাম দায়িত্ব অন্য কাউকে দিয়ে যেতে, কিন্তু তিনি তা করেননি। সচিবও সচরাচর আসে না।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউনিয়ন সচিব মোহাম্মদ শাফায়েত হোসেন দাবী করেন আজই আমার শেষ কর্মদিবস অন্যত্র বদলি হয়েছেন তিনি। অস্বীকার করেন তার বিরুদ্ধের অভিযোগ। তিনি বলেন, একজন অভিযোগ করতেই পারে, আমিও অভিযোগ করতে পারি সে আমাকে হয়রানি করার জন্য এমনটা করছে।

প্রশাসক অগ্রিম স্বাক্ষরের নাগরিকত্বের সনদ পত্রে তারিখ বাসিয়ে উদ্দোক্তার বিতরণের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকি। আজকেও ব্যাংকে যেতে হয়েছিল। নাগরিকত্ব সনদপত্রের কাগজ দুই-তিন ধরে উদ্যোক্তার কাছে ছিল। সে জানত না যে প্রশাসক ছুটিতে থাকলে চলতি তারিখ দেওয়া যায় না। এটা ভুল হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা আফসানা বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছেন তিনি।


আপনার জেলার সংবাদ পড়তে