বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ জনগণের কাছে ফেরাতে হবে: টিআই চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:৪৪ পিএম
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ জনগণের কাছে ফেরাতে হবে: টিআই চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ অবশ্যই জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। এই অর্থ উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোর সমৃদ্ধির জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের উন্নয়নেই ব্যবহার হওয়া উচিত—এমন মন্তব্য করেছেন বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, প্রতিবছর প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হচ্ছে। এই অর্থ যদি দেশের ভেতরে বিনিয়োগ হতো, তবে বাংলাদেশের জিডিপি আরও বড় হতো, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে উন্নয়ন ঘটত, অবকাঠামো শক্তিশালী হতো এবং জনগণের জীবনমান অনেক উন্নত হতো।

ভ্যালেরিয়াঁ বলেন, দুর্নীতি কেবল অর্থনীতির ক্ষতিই করে না, বরং গণতন্ত্রের ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়। গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজকে আক্রমণ, হুমকি ও হয়রানির শিকার হতে হলে রাষ্ট্রে জবাবদিহি নিশ্চিত হয় না। ভয় ও সহিংসতার পরিবেশে গণতন্ত্র পুনর্গঠন অসম্ভব। তিনি দুর্নীতি রোধে স্বচ্ছতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, গোপনীয়তাই দুর্নীতির প্রধান চালিকাশক্তি। তাই ‘বেনিফিশিয়াল ওনারশিপ ট্রান্সপারেন্সি’ নিশ্চিত করতে খসড়া আইন দ্রুত পাস করা জরুরি।

বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ভ্যালেরিয়াঁ বলেন, তথ্য গোপনের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা লড়ছেন, অথচ তাদের উপর হামলা ও হত্যার ঘটনা বেড়ে চলেছে। এভাবে গণতন্ত্র শক্তিশালী হওয়া সম্ভব নয়।

অনুষ্ঠানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির কারণে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির ক্ষতি শুধু অঙ্ক দিয়ে বোঝানো যায় না। এই অর্থ জনগণের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক খাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না হওয়ায় সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থায় এখনো কার্যকর প্রয়োগ হয়নি। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা। তা না হলে কোনো সংস্কার উদ্যোগ টেকসই হবে না।”

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ইফতেখারুজ্জামান জানান, তিনি এ দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নিরপেক্ষভাবে এবং সরকারের কাছ থেকে কোনো সম্মানী নেননি। দুদকের জন্মলগ্ন থেকে টিআইবি এর সঙ্গে কাজ করছে এবং প্রতিষ্ঠানটির খসড়া প্রণয়নেও তাদের ভূমিকা ছিল। তিনি বলেন, দুদকের সঙ্গে টিআইবির সম্পর্ক একদিকে সহযোগিতামূলক, অন্যদিকে সমালোচনামূলকও।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে