ঝটিকা মিছিল ও বেআইনি সমাবেশ দমনে কঠোর অবস্থানে অন্তর্বর্তী সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম | প্রকাশ: ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম
ঝটিকা মিছিল ও বেআইনি সমাবেশ দমনে কঠোর অবস্থানে অন্তর্বর্তী সরকার

ঝটিকা মিছিল ও বেআইনি সমাবেশ দমনে আরও শক্ত অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কর্মসূচির নেপথ্যে যারা সক্রিয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, ঝটিকা মিছিলসহ বেআইনি সমাবেশ প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনিটরিং জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রেস সচিব জানান, বৈঠকে আসন্ন দুর্গাপূজাকে ঘিরে সম্ভাব্য অস্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা গত বছরের ইতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে বলেন, এ বছরও একইভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য আগাম নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সব ধর্মভিত্তিক সংগঠনের সাথে আলোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফজলুল কবির খান, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শ্রম ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম. সাখাওয়াত হোসেন, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শফিকুল আলম জানান, বৈঠকে ডাকসু নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজনের ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়। একইসঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় জোরদার এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার মনে করছে, জুলাইয়ের হত্যাযজ্ঞের বিচার দ্রুত অগ্রসর হওয়ায় এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঘিরে পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সরকারের মতে, বিষয়টি এখন শুধু আইনশৃঙ্খলার নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জে রূপ নিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার দুই উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীরও উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের খবর পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরে সংসদ ভবন এলাকায়, তার আগে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) তেজগাঁওয়ে, ৩১ অগাস্ট ধানমন্ডিতে এবং তারও আগে গুলিস্তান ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা একই ধরনের মিছিল করেন।

অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের ৮ অগাস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দলের শীর্ষ নেতারা কারাগারে বা আত্মগোপনে থাকলেও, কর্মীরা মাঝে মাঝে ঝটিকা কর্মসূচির চেষ্টা চালাচ্ছেন। সরকারের মতে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে