সংসদীয় আসন ও সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে বাগেরহাটে সকাল থেকে চলছে হরতাল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি। জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল, দোকানপাট ও জনজীবন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকাল পৌনে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসানকে কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। পরে তিনি জেলা ত্রাণ, দুর্যোগ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে জেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় হরতালকারীরা। এরপর মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় তারা। এসময় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ডা. ফকরুল হাসানের গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। পরে তিনি হেঁটে অফিসে প্রবেশ করেন।
জেলা সদরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়ক, খুলনা-ঢাকা মহাসড়কের দশানী, নওয়াপাড়া, কাটাখালি, মোল্লাহাট সেতু, বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাজার, খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ফয়লা ও মোংলা বাসস্ট্যান্ডসহ জেলার অন্তত ২০টি স্থানে সড়কে গাছের গুঁড়ি, বেঞ্চ ও গাড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়।
হরতালে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মুক্তিযোদ্ধা মুজাফফর রহমান আলম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা রেজাউল করিম, সেক্রেটারি শেখ মুহাম্মদ ইউনুসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
এর আগে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি এ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে। সংগঠনটি জানিয়েছিল, সংসদীয় আসন ও সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে তারা পাঁচ দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, মঙ্গলবার প্রতিটি উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল এবং বুধবার ও বৃহস্পতিবার পুনরায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হবে।
প্রসঙ্গত, জুলাই মাসে ভোটার সংখ্যা কম থাকার কারণ দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন রামপাল-মোংলা নিয়ে গঠিত বাগেরহাট-৩ আসন কমিয়ে গাজীপুরে নতুন আসন তৈরির ঘোষণা দেয়। এ সিদ্ধান্তের পর থেকেই বাগেরহাটের রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকে। গত ২৫ আগস্ট নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে শুনানি করে। কিন্তু তাতেও কোনো পরিবর্তন হয়নি। অবশেষে গত ৪ সেপ্টেম্বর কমিশন গেজেট প্রকাশ করে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে তিনটিতে নামিয়ে আনে।
নতুন ঘোষণায় সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১, ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ আসন নির্ধারণ করা হয়েছে।