কুমিল্লায় বাসায় মা–মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যু, পুলিশের ধারণা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০১:২৭ পিএম
কুমিল্লায় বাসায় মা–মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যু, পুলিশের ধারণা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড

কুমিল্লা নগরের কালিয়াজুরী এলাকায় একটি ভাড়া বাসা থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এবং তার মায়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাতটার দিকে নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে।

নিহতরা হলেন প্রয়াত আদালত কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার (বা বেগম) এবং তার মেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন। পরিবারটি প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে ওই বাসায় বসবাস করছিল।

নিহতের বড় ছেলে আইনজীবী তাজুল ইসলাম ফয়সাল জানান, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসায় ফিরে দরজা খোলা অবস্থায় পান। ভেতরে ঢুকেই প্রথমে বোনের ঘরে সুমাইয়ার নিথর দেহ দেখতে পান এবং পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন মা তাহমিনার দেহ মেঝেতে পড়ে আছে। তিনি অবিলম্বে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরদিন ভোরে লাশ দুটি উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহিনুল ইসলাম জানান, মরদেহে তেমন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে সুমাইয়ার গলায় দাগ এবং তাহমিনার এক চোখ রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল। এতে ধারণা করা হচ্ছে তাদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বাড়ির মালিক আনিছুল ইসলাম রানা বলেন, নিহতরা খুব একটা মিশুক ছিলেন না। রোববার দিনের বেলায় একজন অপরিচিত ব্যক্তিকে বাসায় আসা–যাওয়া করতে দেখা গেছে। ফুটেজে সেই চিত্র পাওয়া গেছে এবং বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, বাসায় তেমন কোনো জিনিসপত্র খোয়া যায়নি, যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে এটি ডাকাতির ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। স্থানীয়দের সঙ্গে নিহত পরিবারটির শত্রুতার কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। আইনজীবী ফয়সাল দাবি করেছেন, যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে