দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ধানক্ষেতে ইঁদুরের উপদ্রব দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। কালো ইঁদুরের দৌরাত্ম্যে ফসল নষ্ট হয়ে কৃষকেরা পড়ছেন দুশ্চিন্তায়। বিষটোপ, পলিথিনের নিশানা কিংবা কলাগাছ পুঁতেও সমাধান না মেলায় শেষ পর্যন্ত স্থানীয় প্রযুক্তি “বাঁশের চোঙা ফাঁদ’ ব্যবহার শুরু করেছেন কৃষকেরা। ফলে কৃষকরা অনেকটা উপকার পাচ্ছেন।
উপজেলার সাইতাড়া ইউনিয়নের খোচনা গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান বলেন, রাতে করে ফাঁদ বসাই। সকালে গিয়ে দেখি, তাতে ধরা পড়েছে ইঁদুর। গত ছয় মাসে আমি প্রায় ৩ হাজার ইঁদুর মেরেছি। এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর। গত বছর ইঁদুর নিধনে বিশেষ অবদান রাখায় উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পুরস্কারও পেয়েছিলাম।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, ধানক্ষেতে ইঁদুর দমনে এভাবে সামাজিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া গেলে ফসল রক্ষা সম্ভব হবে। পাশাপাশি পরিবেশও থাকবে নিরাপদ। শিয়ালের কারণেও ইঁদুরের উপদ্রব কম হয়। কিন্তু জমিতে এখনও পানি থাকায় শিয়াল জমিতে থাকতে পারছে না। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই জমির পানি শুকিয়ে গেলে শিয়ালের পদচারণা বাড়বে। আমরা এখন শিয়াল মারতে দেইনা।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিনহাজুল হক নবাব বলেন, রাসায়নিক বিষ ব্যবহার করলে পরিবেশ ও অন্যান্য প্রাণী ক্ষতির মুখে পড়ে। কিন্তু বাঁশের ফাঁদ নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য। কৃষকেরা নিয়মিত এটি ব্যবহার করলে ইঁদুরের উপদ্রব অনেকাংশে কমে যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা শারমিন বলেন, স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত এ বাঁশের ফাঁদ পরিবেশবান্ধব ও কার্যকর। এক রাতে বহু ইঁদুর ধরা সম্ভব হওয়ায় কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রতিবছর ইঁদুর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। কৃষকেরা যদি এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তবে ধানসহ অন্যান্য ফসলও সুরক্ষিত থাকবে। বেশি ইঁদুর মারার জন্য অফিসের পক্ষ থেকে পুরস্কৃতও করা হবে।