দীর্ঘ বিরতির পর আবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে টানা ভোট চলছে।
সকালের পর থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভিড় করেন শিক্ষার্থীরা। ভোট দেওয়ার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিকেল ৪টার মধ্যে কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীরাও ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। তারা যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন বলে জানান অনেক ভোটার। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৯১৫ জন এবং ছাত্রী ১৮ হাজার ৯৫৯ জন।
ডাকসুর ২৮টি পদে লড়ছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৫ জন। মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন এবং ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে সর্বাধিক ২১৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারের নির্বাচনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পাশাপাশি ভোটগণনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি কেন্দ্রে এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি ফলাফল প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ভিন্নধর্মী ইশতেহার ও নানা প্যানেল থাকায় এবারের ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেড়েছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য, ছাত্র অধিকার পরিষদসহ অন্তত ১০টি প্যানেল প্রার্থী দিয়েছে। এছাড়া অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্রভাবেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিশেষ দিক হলো, এবারই প্রথমবারের মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্রেইল পড়তে না পারলে আরেকজনের সহযোগিতা নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে ভোটগ্রহণ। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা—দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠবে।