তীব্র বিক্ষোভের পর নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি’র পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
| আপডেট: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম | প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম
তীব্র বিক্ষোভের পর নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি’র পদত্যাগ

নেপালে সারা দেশের রাস্তায় দুই দিনের ধ্বংসাত্মক বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দেশটি রাজনৈতিক অস্থিরতায় উত্তাল হয়ে ওঠে। স্থানীয় গণমাধ্যম এবং এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারফিউ উপেক্ষা করেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের দাবি নিয়ে বিক্ষোভের মুখে পার্লামেন্ট ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ে আগুন দেওয়া হয়। এতে রাজধানী কাঠমান্ডুতে অব্যাহত আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের চিত্র দেখা যায়।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলমান নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছিল। তরুণরা হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে (#NepoKid, #NepoBabies, #PoliticiansNepoBabyNepal) প্রশাসনের দুর্নীতি ও কনিষ্ঠ প্রজন্মের জন্য ক্ষমতার অন্যায় ব্যবহার বিরোধী স্লোগান ছড়িয়ে দিচ্ছিল। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর এবং রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পাওদেলের বাসভবনের বাইরে ভাঙচুর চালায়, কক্ষগুলিতে আগুন দেয় এবং প্রাসাদীয় চিত্রকর্ম নষ্ট করে। শহরের রাস্তাগুলোতে জ্বলন্ত গাড়ি ও ট্রাক ছড়িয়ে পড়ে, ধোঁয়ার কালো স্তূপে পুরো শহর ঢেকে যায়।

প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বুধবার পর্যন্ত বিক্ষোভে অন্তত ২৫ জন নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মন্ত্রী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিচ্ছে। তীব্র উত্তাপের কারণে ট্রিভুভন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও বন্ধ হয়ে যায়।

প্রেসিডেন্ট এবং সেনাপ্রধানের আহ্বান ও দেশব্যাপী বিক্ষোভের চাপের মুখে মঙ্গলবার দুপুরে কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তবে নেপালের সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেও সরকার স্বয়ংক্রিয়ভাবে পতিত হয় না। সরকার পরিচালনার দায়িত্ব এখনও রাষ্ট্রপতির হাতে থাকে, তবে সূত্র মতে, শীঘ্রই পুরো প্রশাসনিক পরিবর্তন ঘটতে পারে।

বিক্ষোভের মূল কারণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা এবং প্রশাসনের দুর্নীতি ও আত্মীয়তন্ত্রের অভিযোগকে সামনে আনা হয়েছে। শোষণমূলক প্রশাসন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে তরুণরা শহরের রাস্তায় বিশাল আন্দোলন গড়ে তুলেছে।