বরিশালের মুলাদীতে একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১টি সরকারি কলেজ, ৫টি এমপিওভুক্ত কলেজে ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে সর্বনিম্ন ২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রণালয়ের একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি ও সেশন ফি বাবদ উপজেলা ও মফস্বল পর্যায়ে ১৫০০ টাকা নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
উপজেলার মুলাদী সরকারি কলেজে ভর্তিতে ৩৫০০ টাকা এবং ভর্তি ফরমের জন্য ৩৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। আরিফ মাহমুদ ডিগ্রি কলেজ ৪ হাজার টাকা, নাজিরপুর ইউনাইডেট কলেজ ৩২৫০ টাকা, হাজী সৈয়দ বদরুল হোসেন কলেজ ২৫০০ টাকা, চরকালেখান আদর্শ কলেজ ও পূর্ব হোসনাবাদ কলেজ ২ হাজার টাকা ভর্তি ফি নিচ্ছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ভর্তিতে কলেজগুলো এই টাকা আদায় করছে। এর মধ্যে কয়েকটি কলেজ ৩ মাস থেকে ৬ মাসের বেতন অগ্রিম নিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বাড়তি টাকা দিয়ে সন্তান ভর্তিতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান অভিভাবকেরা। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
মুলাদী সরকারি কলেজে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মো. রায়হান হোসেন জানান, ৯ সেপ্টেম্বর কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ৩৫০ টাকা নিয়ে একটি ফরম দেন। পরে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ৩৫০০ টাকা ভর্তি ফি পরিশোধ করার নির্দেশণা দেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত নীতিমালায় উপজেলা ও মফস্বল পর্যায়ে কলেজগুলোকে ভর্তি ও সেসন ফি বাবদ ১৫০০ টাকা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো। বাধ্য হয়েই কলেজের ধার্য্যকৃত টাকা দিয়ে ভর্তি হয়েছেন তিনি।
উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের অভিভাবক আব্দুস সালাম বলেন, আরিফ মাহমুদ ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণি ভর্তির জন্য তার ছেলের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৬ মাসের বেতন বাবদ ৯০০ টাকা, সেসন ফি ১২০০ টাকা, ভর্তি ফরমের মূল্য ৩০০ টাকা এবং ভর্তি ফি ১৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। অথচ মন্ত্রণালয়ে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ভর্তি ও সেসন ফি মিলে মোট ১৫০০টাকা নেওয়ার কথা ছিলো।
এব্যাপারে আরিফ মাহমুদ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মনির হোসেন বলেন, একাদশ শ্রেণির ভর্তি ফি, সেসন ফি, ৬ মাসের বেতন ও ভর্তি ফরমের জন্য সর্বমোট ৪ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।
মুলাদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩৪৭০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভর্তি ফরমের খরচের জন্য ৩৫০ টাকা ধরা হয়েছে। সরকারি কলেজের জন্য জারিকৃত নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থী থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। কোনো অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন জোবায়দা বলেন, একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের সুযোগ নাই। যেসব প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।