গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় নতুন যোগদানকারী সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাহিদুল হক বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের আত্মত্যাগের ফলেই আজ আমরা স্বাধীন দেশে বসবাস করতে পারছি। দেশ, জাতী ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা স্বীকার করে সাড়ে ৭ কোটি মানুষের মাঝে খুব অল্প সংখ্যক ছাত্র জনতা তখন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। পাক হানাদার বাহিনী মা-বোনদের ইজ্জত লুটে নিয়েছে। তাঁদের অবদান জাতি সারা জীবন মনে রাখবেন। আমার পিতাও একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে আপনাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সহমর্মিতা থাকবে। ভূমি অফিসে মুক্তিযোদ্ধারা যেকোনো প্রয়োজনে অগ্রাধিকার পাবেন। এছাড়া অন্য যেকোনো দপ্তরে প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে। তিনি ১০ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবনে অনুষ্ঠিত শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত এবং অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্থতা কামনায় এক দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের নতুন কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুদ্দিন খান সভাপতিত্ব করেন।মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সদস্য সচিব মোঃ মফিজ উদ্দিনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহমেদ নান্নু, কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা। এসময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জয়নাল আবেদীন মন্ডল, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রবিউল ইসলাম, কমান্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ সিরাজ উদ্দিন মাষ্টার, মোজাম্মেল হক, রফিকুল আলম খান, সিরাজ উদ্দিন, কাপাসিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক আফজাল হোসাইন, সদস্য সচিব সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম শাহীন, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আশরাফ খান, আলম প্রমুখ। এছাড়া দোয়া অনুষ্ঠানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের শতাধিক সদস্য অংশগ্রহণ করেন। বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কাপাসিয়া উপজেলা মডেল মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান।
দোয়া অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিগত দিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৯১ সালে বিএনপির শাসনামলে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তাদের অবদান অনস্বীকার্য। তৎকালীন কাপাসিয়ার কৃতিসন্তান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আ স ম হান্নান শাহ্ মুক্তিযোদ্ধাদের ভবন নির্মাণের জন্য ইট এবং টাকার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তখন দায়িত্বশীলরা তা লুটপাট করে খেয়েছে। তারপর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আর তেমন কোন উন্নতি হয়নি। দীর্ঘদিন পর একটি সুষ্ঠু পরিবেশে মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হতে পেরে তারা অত্যন্ত খুশি। দীর্ঘ ৭ বছর যাবত নতুন ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও সংস্কার করে ভবনটি উপজেলা ডায়াবেটিস সেন্টারকে ভাড়ার ভিত্তিতে দেয়ার সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১০ আগস্ট গাজীপুর জেলা কমান্ড ৭ সদস্য বিশিষ্ট কাপাসিয়া উপজেলা কমান্ড আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন।