বানিজ্যিক ভাবে আনার ফলের চাষ করছেন কলেজ ছাত্র সোহেল

এফএনএস (টিপু সুলতান; কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
বানিজ্যিক ভাবে আনার ফলের চাষ করছেন কলেজ ছাত্র সোহেল

ইউটিউব ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তরুণ উদ্যোক্তা কলেজ ছাত্র সোহেল রানা আব্দুল্লাহ বিদেশি জাতের আনার চাষ করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, অন্যদিকে স্থানীয়দের মধ্যে জাগিয়েছেন নতুন উদ্যম।ইউটিউব দেখে চাষ করে প্রায় ৩ লাখ টাকার আনার বিক্রির আশা করছেন তিনি।চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আনার বাগানে বিপুল পরিমাণ ফল এসেছে। এই সফলতা দেখে অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক আগ্রহী হয়েছেন আনার চাষ করতে।সোহেল রানার কাছ থেকে আনার চাষের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছেন নতুন উদ্যোক্তারা।এ বছর বাগান থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকার আনার ফল বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন। অত্যন্ত সুস্বাদু ও ওষুধি গুণসম্পন্ন এ ফল এতোদিন বিদেশি ফল হিসেবেই পরিচিত ছিল।কিন্তু দেশের মাটিতে প্রথম এ ফলের সফল চাষ হয়েছে উদ্যোগী হয়েছেন সোহেল রানা। 

২০২১ সালে ইউটিউব ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে পাশ্ববর্তী ভারতীয় ভাওয়া জাতের ৯১টি চারা সংগ্রহ করে এক বিঘা জমিতে রোপণ করেন। গাছ লাগানোর দুই বছর পর থেকেই ফুল আসা শুরু হয়। বর্তমানে পুরো বাগান ভরে গেছে ফুলে ফলে। একেকটি গাছে ২৫ থেকে ৬০টি পর্যন্ত আনার ধরছে। বাগান দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ভিড় জমাচ্ছে। ফলগুলো লালচে-সবুজ আভা ছড়িয়ে ঝলমল করছে, যেন প্রকৃতির ক্যানভাসে আঁকা রঙিন তুলির আঁচড়।কৃষক আজিজুল হক বলেন, শুরুতে আমরা ভেবেছিলাম এই মাটিতে আনার হবে না। কিন্তু এখন দেখছি ফলনে ভরপুর গাছ। দেখে মনটা ভরে যায়।কলেজ ছাত্র আশিকুর রহমান জানান, ফেসবুকে ছবি দেখে এসেছি। সত্যিই চোখ ধাঁধানো দৃশ্য, মনে হয় যেন কাশ্মীরের কোনো বাগান।সোহেল রানা আব্দুল্লাহ বলেন, প্রথমে অনেকেই নিরুৎসাহিত করেছিল, কথা শুনে অনেকটা খারাপ লাগতো। কিন্তু মন খারাপ হলে ও আমি হাল ছাড়িনি। স্থানীয় বাজারে আনারের চাহিদা ভালো থাকায় আশা করছি এ মৌসুমেই ৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারব এমন টা আশা করছি। ভবিষ্যতে আরও জমি নিয়ে আনার চাষ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি।এক সময়ের অনাবাদি জমিতে এখন চোখে পড়বে বিদেশি ফল সোহেল রানার আনারের বাগান। বাগানের গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে সুস্বাদু আনারের ফুল আর ফল।ঝিনাইদহ জেলায় প্রথমবারের মতো আনার চাষ করে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তিনি। সোহেলের সফলতার গল্প এখন এলাকাবসীর মুখে মুখে, তার দেখাদেখি আনার চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এলাকাবাসী। এদিকে অনেইে আনার চাষের উদ্যোগের কথা জানিয়েছে।আনার চাষ করে সফলতা পেয়েছে ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলার যোগীহুদা গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা সোহেল রানা(২৪)।র্অনাস(দাওরা হাদিস)পড়ুয়া মেধাবি ছাত্র সোহেল রানা আব্দুল্লাহ চাকরি পাবে না এমন টা চিন্তা করে তিনি কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে আনার ফলের চাষ করেছেন। ভারতীয় ভাওয়া জাতের আনার চাষ করেছেন। বাগানে পোকামাকড় আক্রমণ রোধে কীটনাশকের পাশাপাশি আলো ও পানরি ফাঁদ ব্যবহার করছেন। বর্তমানে প্রতি কেজি আনার বিক্রি করছেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।লেখাপড়ার পাশাপাশি কৃষিকাজে বরাবরই আগ্রহ ছিলো সোহেল রানার। লেখাপড়া করে চাকরি পাবে না এমনটা চিন্তা আসে তার মধ্যে। ফলে  ইউটিউব দেখে আনার চাষে আগ্রহী হয়ে বাড়ির পাশের জমিতে ভাওয়া জাতের আনারের চারা রোপন করেন স্বপ্নের প্রকল্প। পরবর্তিতে তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি।কঠোর পরিশ্রম আর একাগ্রতায় সফলতার দ্বার প্রান্তে সোহেল রানা,বাগান তৈরিতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। চাকরি পাবে না বলে লেখাপড়ার পাশাপাশি কিছু একটা করার ইচ্ছে ছিল অনেক দিন ধরে। ইউটিউবে আনার চাষ দেখে আমার ভালো লাগে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় আনার চাষ শুরু করে। এখন প্রতিটি গাছে ফুল এবং ফল ধরেছে,বছরে ৩ বার আনার তোলা যাবে। সোহেল রানা বলেন, রোগবালাই দেখা না দিলে একেকটি গাছ কমপক্ষে ৩০ বছর পর্যন্ত ফল দেয়। যতদিন যাবে এসব গাছ থেকে তত বেশি ফল পাওয়া যাবে। আগামীতে এই ফল উৎপাদন করে আর্থিক ভাবে লাভবানের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনার চাষের সফলতার খবর ছড়িয়ে পড়েছে।বিদেশি এই ফল দেশের মাটিতে ফলানো সম্ভব-এটা দেখে অনেকেই পরামর্শ নিচ্ছেন তাদের কাছ থেকে।পরীক্ষামূলক ভাবে আনার চাষে যেহেতু সফল হওয়া গেছে তাই আশা করা যায় এলাকায় আনার চাষের বেশ সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন,আনার বাংলাদেশের আবহাওয়ায় একটি নতুন সম্ভাবনা।আমরা উদ্যোক্তাদের পাশে আছি তার সফলতা অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে