সুন্দরবনে শামুক নিধনে হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

এফএনএস (এস.এম. শহিদুল ইসলাম; সাতক্ষীরা) : | প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:০৫ পিএম
সুন্দরবনে শামুক নিধনে হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসে নতুন কৌশল নিয়েছে অসাধু চক্র। মাছ ও জলজ প্রাণী শিকারের পাশাপাশি এখন শুরু হয়েছে নির্বিচারে শামুক নিধন। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু ব্যবসায়ী অর্থের লোভে বনসংলগ্ন এলাকার মানুষকে কাজে লাগিয়ে ট্রলার ও নৌকায় ভরে শামুক সংগ্রহ করছেন। পরে এসব শামুক পাচারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে।

পরিবেশবিদরা বলছেন, শামুক নদী-খালের পানির গুণগত মান বজায় রাখা ও মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর খাদ্য সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু নির্বিচারে নিধনের কারণে নদীর তলদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। এতে শুধু সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য নয়, জেলেদের ভবিষ্যৎ জীবিকাও মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।

নীলডুমুর এলাকার জেলে মোজাম্মেল হক বলেন, “আমরা জেলেরা নদী রক্ষায় তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখি। অথচ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে শামুক নিধন করে আমাদের পরিশ্রমকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে।”

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, চিংড়ি আহরণে বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহারের কারণে নদী-খালের ছোট মাছ, চিংড়ির রেণু, কাঁকড়া ও অন্যান্য প্রাণী মারা যাচ্ছে। ফলে দিন দিন জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে সুন্দরবন ও উপকূলীয় অঞ্চল।

এ বিষয়ে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, বনবিভাগের সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। অবৈধ সম্পদ আহরণে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবনের সহকারী বন সংরক্ষক ফজলুল হক বলেন, “অবৈধভাবে শামুক নিধন রোধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা শামুক উদ্ধার করে নদীতে অবমুক্তও করেছি। টহল জোরদার করা হয়েছে, যাতে কোনো অসাধু চক্র সুন্দরবন থেকে সম্পদ আহরণ বা পাচার করতে না পারে।”

সচেতন মহল বলছেন, দ্রুত কঠোর আইন প্রয়োগ ও প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ভয়াবহ সংকটে পড়বে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে