পুঠিয়ায় অর্ধশতাধিক অবৈধ প্যাথলজি গড়ে ওঠার অভিযোগ উঠেছে

কে এম রেজা; পুঠিয়া, রাজশাহী | প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম
পুঠিয়ায় অর্ধশতাধিক অবৈধ প্যাথলজি গড়ে ওঠার অভিযোগ উঠেছে
রাজশাহীর পুঠিয়ায় সরকারি নিয়ম অমান্য করে যত্রতত্রভাবে অর্ধশতাধিক প্যাথলজি গড়ে ওঠার অভিযোগ উঠেছে। বেশিরভাগ প্যাথলজিতে সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকৃত অভিজ্ঞ কোনো টেকনোলজিস্ট নেই। প্যাথলজিগুলো থেকে ভুয়া পরীক্ষা-নীরিক্ষার রির্পোট দেওয়ার একধিক নজির রয়েছে। জানা গেছে, পুঠিয়ায় ৫০ শয্যা হাসপাতালটিকে কেন্দ্র করে উপজেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক মতো প্যাথলজি গড়ে উঠেছে। হাসপাতাল এলাকা ছাড়াও একাধিক গ্রাম্য এলাকায় হুট করে রাতের-আধারে প্যাথলজি গড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সদরের কয়েকটি প্যাথলজির পরীক্ষা-নীরিক্ষার লাইসেন্স আছে বলে জানা গেছে। বেশিভাগ প্যাথলজি আবার দুই/একটি পরীক্ষা-নীরিক্ষার লাইসেন্স নিয়ে সব রোগের পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে। উপজেলায় ৯টি ক্লিনিক রয়েছে। প্রতিটি ক্লিনিকের আবার আলাদা আলাদা প্যাথলজির শাখা খোলা রয়েছে। প্যাথলজিগুলিতে সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকৃত কোনো টেকনোলজিস্ট দেখা যায় না। নতুন কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হতে পাশকৃত ছেলেমেয়েদের টেকনোলজিস্ট হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পুঠিয়া হাসপাতালে কিংবা প্যাথলজিতে চিকিৎসকের নিকট রোগী আসলে,প্রথমেই অনেকগুলি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করার নিদের্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ,পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হলে,সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক প্যাথলজিগুলির নিকট হতে কমিশনের টাকা পেয়ে যাবেন।। প্যাথলজির আয়া বা পুরুষ দালালরা হাসপাতাল খোলা থাকলে,রোগীদের টানাহ্যাচরা করে প্যাথলজিতে আনতে দেখা যায়। সিভিল সার্জন অফিস থেকে অভিযানে আসার আগেই প্যাথলজিগুলেকে জানিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তখন প্যাথলজিগুলি বন্ধ করে রাখেন। সিয়াব হোসেন নামের ব্যক্তি বলেন, মানুষের রোগ হলে, মানুষ অসহায় হয়ে পড়েন, আর এই সুযোগটি ক্লিনিক,প্যাথলজি, চিকিৎসকরা কাজে লাগায়ে ফাইদা লুটছে। শিপন ইসলাম বলেন, পুঠিয়ার কোনো পরীক্ষা-নীরিক্ষা রির্পোট, রাজশাহী জেলা সদরের কোনো চিকিৎসকের নিকট নিয়ে গেলে, সেগুলি বাতিল করে পূর্ণরায় নতুন করে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে বলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা বলেন, শুধুমাত্র জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সঙ্গে সমঝোতা করে অবৈধ প্যাথলজিগুলি চলছে। প্যাথলজিগুলি থেকে ভুয়া পরীক্ষা-নীরিক্ষার রিপোর্ট দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলির অভিযোগ শুনার কোনো ব্যক্তি কিংবা সরকারি কোনো সংস্থা নেই। বরং প্যাথলজির মালিকের টাকার প্রভাবে কেউ প্রতিবাদ করে লাভ পায় না। এজন্য, উপজেলা জুড়ে যত্রতত্র ভাবে প্যাথলজিক গড়ে উঠার শাহস পাচ্ছে। এদের বেশীরভাগ প্যাথলজিতে অভিজ্ঞ কোনো টেকনোলজিস্ট নেই। এরা বিভিন্ন অভিজ্ঞ পরীক্ষকদের ভুয়া সীল ব্যবহার করে রোগীদের রোগ নির্ণয়ের রির্পোট দিচ্ছেন। পুঠিয়া দুর্গাপুর চারঘাট তিন উপজেলার ক্লিনিক প্যাথলজি মালিক সমিতির সভাপতি আ.রহমান বলেন, উপজেলায় ৯টি ক্লিনিক, ৮টি বৈধ প্যাথলজি রয়েছে। বাকি প্যাথলজিরগুলোর সঙ্গে আমাদের সমিতির কোনো সঙ্গে সম্পর্ক নেই। অবৈধ প্যাথলজির কারণে,আমাদের ব্যবসা ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজাশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা এসআইএম রাজিউল করিম বলেন,আমরা অতিসত্বর উপজেলাগুলোতে অভিযানে বাহির হব। ক্লিনিক প্যাথলজিরগুলোর লাইসেন্স যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার হবে।
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে