ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের ভাঙ্গা উপজেলা থেকে আলগি ও হামিরদি ইউনিয়ন দুটিকে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করার নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপনকে বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রুল জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর-৪ এবং ফরিদপুর-৫ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বহাল চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছিল। রিটে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, বিএনপির অঙ্গসংগঠন জিয়া শিশু-কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম রেজা, আইনজীবী এম ফাহাদ খান, ব্যবসায়ী এম এম শহিদুল ইসলাম শাহীন, এবং চরভদ্রাসন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাজাহান শিকদারসহ মোট ১৬ জন ভোটার রিটটি দাখিল করেন।
এই রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন ২০২১ সালে ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে, যেখানে চরভদ্রাসন এবং সদরপুর উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। তবে এতে ভাঙ্গা উপজেলা থেকে আলগি ও হামিরদি ইউনিয়ন দুটিকে বিচ্ছিন্ন করে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার পল্লব বলেন, নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালে পার্লামেন্টের সীমানা পুনর্নির্ধারণের আইন লঙ্ঘন করে দুটি আসন একত্রিত করে একটি আসনে রূপান্তরিত করেছে। ফলে ভাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়নকে এক অন্য সংসদীয় আসনের অন্তর্ভুক্ত করাটা আইনের প্রতি সম্মানজনক নয় এবং এই সিদ্ধান্তটি পুনর্বহাল করার আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলেছে। বিশেষত ভাঙ্গা উপজেলায় সাধারণ জনগণ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তাদের দাবি, আলগি এবং হামিরদি ইউনিয়ন ভাঙ্গা উপজেলার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এই দুটি ইউনিয়ন ফরিদপুর-৪ আসনে থাকতে হবে।
হাইকোর্টে রিট দায়ের হওয়ার পর, রিটকারীরা নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিল। কিন্তু নোটিশের কোনো জবাব না পাওয়ার পর তারা হাইকোর্টে রিটটি দাখিল করেন। আইনজীবী পল্লব আরও বলেন, "সংবিধান এবং নির্বাচনি আইনে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষিত রাখতে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন কমিশন এমন অবৈধ পদক্ষেপ নিতে পারে না।"
এখন, আদালত নির্বাচনের সীমানা সংক্রান্ত এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি পর্যালোচনা করে আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে তার প্রজ্ঞাপনের বৈধতা বা অবৈধতা নিয়ে একটি স্পষ্ট জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।