দেশের কারাগারগুলোকে মাদকমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওই লক্ষ্যে কারা অধিদপ্তর মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করেছে। সেজন্য কারাগারের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলছে ডোপ টেস্ট। এক মাস ধরে চলতে থাকা এ কাযক্রমে এখন পর্যন্ত ডোপ টেস্টে অন্তত ৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কারাকর্মী ও বন্দি রয়েছে। প্রাথমিকভাবে কাউকে সন্দেহ হলেই কারা কর্তৃপক্ষ তাকে ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে আসছে। আর পরীক্ষায় কারো পজিটিভ হলে তা আরো নিশ্চিত করতে পাঠানো হচ্ছে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে। চলতি সেপ্টেম্বর মাসকে দেশের কারাগারগুলোকে মাদকমুক্ত করতে মাদকবিরোধী কার্যক্রমের মাস হিসেবে ঘোষণা করে কারা অধিদপ্তর অভিযান শুরু করেছে। কারা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মাদকের ভয়াবহতা বিশ্বজুড়ে প্রকট রূপ নিয়েছে। এদেশেও মাদকের প্রভাব সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে এবং দিন দিন তা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। দেশের কারাগারগুলোও ওই ক্ষতিকর মাদকের প্রভাবের বাইরে নয়। সেজন্যই চলতি সেপ্টেম্বরকে কারাগারগুলোতে মাদকবিরোধী কার্যক্রমের মাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কারণ মাদকাসক্তির বিষয়ে জিরো টলারেন্স কঠোর নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। গত এক বছরে মাদকসেবী ২৯ জন সদস্যকে মাদক বহন, গ্রহণ ও সরবরাহে জড়িত থাকার অপরাধে ফৌজদারি মামলায় কারাগারে পাঠানোসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাছাড়া এ সংক্রান্ত সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কারা সদর দপ্তর নিজস্ব ডোপ টেস্টিং মেশিন সংগ্রহ করেছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) ভিগত ২০২০ সালের মার্চে ডোপ টেস্ট চালু করা হয়। ২০২০ সালের ১০ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ২৭ জুলাই পর্যন্ত ডোপ টেস্টে ১২০ জন পুলিশ সদস্যকে মাদকাসক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ২০২০ সালের ১০ মার্চ থেকে ডিএমপিতে শুরু হওয়া ওই ডোপ টেস্ট ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত জোরেশোরে চলে। তারপর ধীরে ধীরে ওই কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়। কিন্তু এখন কারাগার এলাকায় মাদক নির্মূল করতে স্থানীয় কারা প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহায়তায় বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে আগত দর্শনার্থী ও কারাভ্যন্তরে প্রবেশকালে সব বন্দি এবং কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ তল্লাশি। তাছাড়া কারারক্ষী, বন্দি, আগত দর্শনার্থীদের জন্য মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। কারাগারে এখণ সন্দেহভাজন বন্দি ও কারাকর্মীদের নিজস্ব ব্যবস্থায় ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন জানান, বর্তমানে মাদকসেবী হিসেবে সন্দেহভাজন ব্যক্তির ডোপ টেস্ট কারা অভ্যন্তরেই করা হচ্ছে। কারাগারই ডোপ টেস্টিং মেশিন কিনেছে। মাস খানেক ধরে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৮ থেকে ১০ জনের মতো শনাক্ত করা হয়েছে। কারাগারকে মাদকমুক্ত করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে।