ঝিকরগাছার তিনটি প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে

এফএনএস (মোঃ ইলিয়াস উদ্দিন; ঝিকরগাছা, যশোর) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:০৬ এএম
ঝিকরগাছার তিনটি প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে

যশোরের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদের তীরে আওয়ামী প্রভাবশালীদের মাছের ঘেরের বেড়িবাঁধ তৈরীর কারণে নদের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। এর ফলে রঘুনাথনগর হাইস্কুল, প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ডাকঘর নদের গর্ভে বিলীন হতে বসেছে। রবিবার রাতে (২২ ডিসেম্বর) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিশাল শিশু গাছ নদী গর্ভে পড়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি দ্রুতই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠিত রঘুনাথ নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রঘুনাথনগর মৌজার ৬৬৭ ৬৬৮ এবং ৬৭২ নম্বর দাগে ৪৮ শতক জমির উপরে অবস্থিত, রঘুনাথ নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি রঘুনাথ নগর মৌজার ৬৬৮, ৬৮১ ১০৬৬ দাগের ৩ একর ৮ শতক জমির উপর অবস্থিত এবং রঘুনাথনগর ডাকঘরটি প্রায় দুই বিঘা জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিষ্ঠানগুলো খরস্রতা কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত। বর্তমানে স্রোত হীন মৃতপ্রায় কপোতাক্ষ নদ।

স্রোতহীন মৃতপ্রায় কপোতাক্ষ নদটির নব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালে খনন কাজ শুরু হয়ে শেষ হয়। আওয়ামী লীগের শাসনামলে নদের খনন কাজ চলাকালীন সময়ে ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ফারুক আহম্মেদ শান্তি কপোতাক্ষ নদ ঘেঁসে চার পাঁচটি মাছের ঘেরের বেড়িবাঁধ তৈরি করেন।

বেড়িবাঁধের উচুপাড় কপোতাক্ষ নদের ভেতর ঢুকে যাওয়ার কারনে বেজিয়াতলা ব্রীজ থেকে বাঁকড়া অভিমুখে কপোতাক্ষ নদের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে রঘুনাথ নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়, রঘুনাথনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং রঘুনাথনগর পোস্ট অফিস প্রতিষ্ঠান গুলোর দিকে চলে এসেছে। পানির স্রোতের আঘাতে প্রায় ৫০ ফুট নদের পাড় ভেঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলো কপোতাক্ষ নদের কিনারে চলে এসেছে। আগামী বর্ষা মৌসুমী আসার আগেই নদের পাড় ঠিক করা না হলে প্রতিষ্ঠান তিনটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ফারুক আহমেদ শান্তি জানান, ২০০৪ সালে বেড়িবাঁধ তৈরিকালে তৎকালীন মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কপোতক্ষ নদের সীমানা মেপে আমার বেড়িবাঁধ তৈরীর নির্দেশ দেন। আমার জমি কপোতাক্ষ নদের মধ্যে নাই।

রঘুনাথ নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হাসানুল বান্না জানান, বাপ-দাদার আমল থেকেই খরস্রতা কপোতাক্ষ নদের তীরে এই প্রতিষ্ঠানগুলো অবস্থিত। তখন কিছু না হলেও এখন এমনটা হওয়ার একমাত্রই কারণ নদের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে

রঘুনাথনগর গ্রামের বাসিন্দা এবং ঝিকরগাছা সরকারি এম এল পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সাবেক মাহবুবুল ইসলাম মন্টু (৭৫) বলেন আমরা ছোটকাল থেকেই খরস্রোতা নদের তীরে এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলো দেখেছি। এখন একটি মৃত প্রায় নদের তীরে প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে যাওয়াটা দুঃখজনক। এটা প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করা সরকারের জরুরী।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ইয়াকুব আলী খান জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখেছি নদের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। এছাড়াও স্কুলের পশ্চিম পাশে একটি পুকুর থাকার কারণে পুকুরের পানি নদের দিকে চোয়াচ্ছে বলেই এই ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার বিকেলে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষানাবেক্ষণের ব্যবস্থা করব।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে