বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির একাংশের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের সংগীতা মোড়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে ৩১দফা নিয়ে আলোচনা সভা করার কথা থাকলেও সে বিষয়ে খুব বেশি আলোচনা হয়নি। সভাজুড়ে ছিলো বর্তমান আহবায়ক কমিটি বাতিল করে পূর্ণাঙ্গ রেগুলার কমিটির দাবি। অনেক বক্তার কন্ঠে গ্রুপিংয়ের কারণে জেলা বিএনপিতে অনৈক্যের সুরও ধ্বনীত হয়েছে। তৃণমূল বিএনপির দাবি গ্রুপিং বাদ দিয়ে বিএনপিকে এক ছাদের নিচে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিএনপিকে সংগঠিত হলে জেলার চারটি আসনই বিএনপির ঘরে যাবে বলে মন্তব্য করেন অনেকেই। জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক তারিকুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন দেবহাটা উপজেলা বিএনপি আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর উপজেলা বিএনপি সভাপতি মাস্টার আব্দুল ওয়াহেদ, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আইনুল ইসলাম নান্টা, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম চন্দন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ভুট্টো প্রমুখ। সভায় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। এই মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটির কারণে নেতা-কর্মীরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আহ্বায়ক কমিটির অনেকেই আপোষ করে চলেছেন বলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে উপজেলাগুলোতে ইচ্ছেমতো পকেট কমিটি করারও অভিযোগ তোলেন বক্তারা। বক্তারা জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে জেলা আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করার দাবি জানান। সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এদিকে জেলা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাংশের দাবি আজকে যারা বিএনপিকে সভা করছেন তাদেরই একাংশের নেতাকর্মীদের হাতে ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি আমানউল্যাহ আমানকে শিল্পকলা একাডেমি চত্ত্বরে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছিল। সাপের মতো পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছিল দলের অনেক সিনিয়র নেতাকে। সেইদিন থেকে তো বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে পড়ে। আমান হত্যার পর আর জেলায় বিএনপির দলীয়ভাবে একক কোন সভা-সভাবেশ হয়নি। যা হয়েছে তা খন্ড খন্ড আকারে। এমনকি আমান হত্যার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবকেও জেলা শহরের কোন সভা সমাবেশে দেখা যায়নি। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১১ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এড. সৈয়দ ইফতেখার আলী আহবায়ক ও আব্দুল আলিমকে সদস্য সচিব করে ৩৫সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ৯টি ইউনিটের কমিটি গঠনের নির্দেশনাও দেওয়া হয় চিঠিতে। তবে ৫বছর পার হলেও গঠন হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি।