ডেঙ্গু এখন আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। রাজধানীর সাথে এখন বাহিরের জেলাগুলোতেও মৃত্যু সংখ্যা হুঁ হুঁ করে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া সবার বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলায়।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, “২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া চারজন হলেন, পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘুটাবাছা এলাকার সুজন ঢালীর মেয়ে শুক্লা ঢালী (১৩), একই উপজেলার আমড়াতলা এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে হাসান (২৫)। কাকচিড়া ইউনিয়নের হরিদ্রা এলাকার নাসির মোল্লার ছেলে সিদ্দিক মোল্লা (৪৫)। পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের রুহিত এলাকার আব্দুর রশিদ মোল্লার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৭৫)। এদের মধ্যে সিদ্দিক মোল্লা ও নুরজাহান বেগম পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায়, হাসানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল নেয়ার পথে এবং শুক্লা ঢালী নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।”
বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন (২০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৯২৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ জন। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ১৩৫ জন। এদের মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ৯১ জন, পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জন, তালতলী উপজেলায় ১০, বামনা উপজেলায় ১২, বেতাগীতে ৮ এবং তালতলী উপজেলায় ৩ জন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে পাথরঘাটায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি থামার পরেই রোদ দেখা দিয়েছে, আর এরপর থেকেই ডেঙ্গুর আক্রমণ বেড়ে উঠেছে। এ কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে।পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাখাল বিশ্বাস অপূর্ব বলেন, বৃষ্টি যখন থেকে কমছে তখন থেকেই শুরু হয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীর চাপ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিনিয়ত জ্বর নিয়ে রোগী আসছে চিকিৎসা নিতে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি চিকিৎসা দিতে, তবে পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। কিছুতেই তা নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফাত্তাহ্ বলেন, “৩ জনের মৃত্যুর খবর আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তিনি বলেন, মারা যাওয়া সিদ্দিক মোল্লাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু অর্থের অভাবে তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য যেতে পারেনি। সিভিল সার্জন বলেন, চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। বিশেষ করে পাথরঘাটার অবস্থা খুবই খারাপ। তারপরেও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।”