সাটুরিয়ায় ব্রীজের মুখে মাটি ভরাটের প্রতিবাদে কৃষকদের মানববন্ধন

এফএনএস (মোঃ মোতালেব হোসেন; সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ) : | প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম
সাটুরিয়ায় ব্রীজের মুখে মাটি ভরাটের প্রতিবাদে কৃষকদের মানববন্ধন

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় একটি সেতুর পাশে পানি নিষ্কাশনের পথ মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয় গ্রামবাসী। শনিবার সকাল ৯টায় উপজেলার হরগজ বাজারের চৌরাস্থা থেকে প্রথমে বিক্ষোভ শরু হয়ে বাজারের প্রধান প্রধাস গলি প্রদক্ষিণ করে পূর্বের স্থানে এসে শেষ হয়। পরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে কাজী শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন, কৃষক সাইদুর রহমান ও দেলোয়ার হোসেন। তারা অভিযোগ করেন, হরগজ মোড় থেকে বাজার সড়কের বালুর চর নামক স্থানে অবস্থিত একটি সেতুর উত্তর পাশে দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশনের একটি স্বাভাবিক পথ ছিল।  কিন্তু ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করে রাতের আঁধারে ওই নিষ্কাশন পথটি মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়।

কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী  আনোয়ার, ফরিদ ও আলতাফ এই মাটি ভরাটে সহায়তা করেছেন। এতে করে সড়কের দুই পাশের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে পানি আটকে যাচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণ পাশে হাজার হাজার একর জমিতে পানি জমে গিয়ে ফসল নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে ধান ও সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তিনি আরো বলেন, এই বালুর চকের ফষলি জমির পানি খালে যেতো পরে তা ধলেশ্বরী নদীতে গিয়ে পড়ত। তা এখন যেতে পারছে না। মাটি ভরাটের কারনে অল্প বৃষ্টির ফলে ফষলি জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, "নিষ্কাশন পথ বন্ধ হওয়ায় আমার জমির পানি বের হতে পারছে না। মাঠে পানি জমে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। সামনে শীতকাল, এখনই ব্যবস্থা না নিলে রবিশস্যও চাষ করা সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে আমার প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই বালুর চকে শত শত কৃষকের চাষকৃত ভুট্রা, ধান ও বিভিন্ন সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বেলাল হোসেন বলেন, ব্রীজের উত্তর পার্শে হানিফ আলী, ঝর্ণা বেগমসহ কয়েকজন জমি কিনে। কিন্তু তাদের কেনার চাইতে বেশী বাড়তি পানি নিস্কাসনের যে পথ ছিল তা রাতের আধারে মাটি ভরাট করে ফেলেছে। রাস্তার দুই ধারে হাজার হাজর এক জমির পানি বের হতে পারছে না। চলতি মৌসমে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে ফষল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ক্ষতি বিষয়ে আমরা হরগজ ভূমি সহকারী, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে গণ সাক্ষর  করে লিখিত অভিযোগ করেছি। হরগজ এলাকার ঐ চিন্থিত মহল আনোয়ার, ফরিদ ও আলতাফের সহযোগীতায় প্রশাসনও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যা খুবই রহস্যজনক মনে হচ্ছে।

দ্রুত নিষ্কাশন পথ খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধে আরো কৃষকরা বলেন বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা উপজেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাওসহ আরও বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।

এ বিষয়ে হানিফ আলী ও ঝর্ণা বেগম বলেন আমরা আমাদের কেনা জমিতেই মাটি ভরাট করেছি।

আর এ ব্রীজের মুখে মাটি ভরাট কাজে সহায়তাকারী ফরিদ বলেন, জমির মালিক খুব গরীব, তাদের নিজেদের জমিতে মাটি ভরাট করেছে। তাদের নিকট একটি পক্ষ চাঁদা দাবী করেছিল, চাঁদা না পেয়ে এবং আমাদের চরিত্র হনন করার জন্য এ মানববন্ধনের আয়োজন করেছে।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ আমি হাতে পাইনি। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদন্ত করে দেখব। অভিযোগের সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে