কালীগঞ্জে চিকিৎসক সংকটে বন্ধ সিজারিয়ান সেবা, ভোগান্তিতে প্রসূতিরা

এফএনএস (টিপু সুলতান; কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:০২ পিএম
কালীগঞ্জে চিকিৎসক সংকটে বন্ধ সিজারিয়ান সেবা, ভোগান্তিতে প্রসূতিরা

কালীগঞ্জসহ পাঁচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে প্রসূতি সেবা ও সিজারিয়ান অপারেশন। জেলা সদর বাদে মহেশপুর, হরিণাকুন্ডু, শৈলকুপা, কালীগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে এ সেবা বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে এনেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলছেন কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রসূতি মায়েদের বাধ্য হয়ে ছুটতে হচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে। এতে বাড়ছে চিকিৎসা ব্যয় এবং মা ও নবজাতক ঝুঁকিতে পড়ছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। চিকিৎসক থাকলে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতি মাসে অন্তত ২০০ প্রসূতি সেবা নিয়ে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে সিজারিয়ান বন্ধ থাকায় এসব পরিবারগুলো চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় এক বছর ধরে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ। একই পরিস্থিতি অন্য চার উপজেলাতেও। এনেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ ও গাইনি চিকিৎসকের অভাবেই এ সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে বলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এসব হাসপাতালে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার, অক্সিজেন সিলিন্ডার, স্যালাইন স্ট্যান্ডসহ সব ধরনের সরঞ্জাম থাকলেও তা পড়ে রয়েছে।

প্রসূতি শিরিন আক্তার বলেন, সরকারি হাসপাতালে গেলে খরচ কম হতো। কিন্তু সরকারী হাসপাতালে সেবা বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে। অভাবের সংসারে এতো টাকা যোগার করা নিয়ে চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।ইনডিয়ান সীমান্তবর্তী এ উপজেলায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যার এই হাসপাতাল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এখানে চিকিৎসা সেবার চেয়ে সংকটের তালিকাই এখন বড়। আগে প্রতি মাসে যেখানে গড়ে ১৪ থেকে ১৮টি সিজার হতো, সেখানে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসক সংকটে অপারেশন বন্ধ রয়েছে। ফরে অযত্নে পড়ে আছে লেবার ওয়ার্ডের অপারেশন থিয়েটার। তিনি আরো বলেন, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন অন্তত সাড়ে তিনশ থেকে ৫শ রোগী। অথচ ২১টি অনুমোদিত ডাক্তারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ১৭টি পদই শূন্য পড়ে আছে।হরিণাকুন্ডুর গৃহবধূ ফারজানা খাতুন জানান, ক্লিনিকে গেলে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। গরিব মানুষ কীভাবে এই টাকা জোগাড় করবে? তারপরও বাধ্য হয়ে ক্লিনিকেই যেতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন,সব উপজেলাতেই অপারেশনের যন্ত্রপাতি রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক সংকট বড় সমস্যা। দ্রুত পদায়ন হলে সিজারিয়ান চালু করা সম্ভব হবে বলে যোগ করেন। খুব দ্রুতই এসব হাসপাতালে চিকিৎসক পদায়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে