রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার মধ্যে পলাশিফতেপুর, দাদপুর, চকরাজাপুর চরে তাদের বাড়ি। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে নৌকা যোগে বাঘা সদরে গিয়েছিলেন। কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে হবে। তারা মূল পদ্মা নদী নৌকায় পার হন। কিন্তু নিজ নিজ বাড়ি যেতে কোন ব্যবস্থা নেই। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে পানির মধ্যে দিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়।
বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে ১৫টি চর রয়েছে। এসব চরের বেশির ভাগ মানুষ ভূমিহীন অসহায় খেটে খাওয়া মানুষ। তারা প্রতিনিয়ত প্রকৃতির খামখেয়ালি রূপকে বরণ করে বসবাস করছেন। এদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ শুকনো মৌসুমে কৃষি কাজ আর বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
চরে অবকাঠামোগত উন্নয়নের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক মন্থর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে আছে।
চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, তিন সপ্তাহ আগে বন্যা হয়েছিল। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে না নিতেই আবারও পদ্মার পানি বাড়া শুরু করেছে।
কালিদাসখালী চরের কলেজ পড়ুয়া ছাত্র মিলন খান বলেন, প্রকৃতির সাথে লড়াই করে চরে বসবাস করতে হচ্ছে। পানির মধ্যে দিয়ে যারা বাড়ি ফিরছেন, তাদের চেয়েও ভয়াভয়াতার মধ্যে অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। পদ্মায় পানি নতুনভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকের মধ্যে আছি।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, কয়েক বছরের ব্যবধানে পদ্মার ভাঙনে প্রায় সহস্রাধিক বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, বিজিবি ক্যাম্প, হাজার হাজার বিঘা আবাদি-অনাবাদি জমি চলে গেছে পদ্মার গর্ভে। এ ভাঙনে গৃহহারা হয়েছে হাজারো পরিবার। পদ্মার চরের মধ্যে ১৫টি চর নিয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়েছে। আবারও পদ্মায় পানি বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবে মানুষ আতংকিত হচ্ছে।