পাবনার বেড়া পৌর এলাকায় দুই মহল্ল্লার বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বৃশালিখা কোলঘাট এলাকায় বৃশালিখা ও সওদাগরপাড়া মহল্ল্লাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে ধীরে ধীরে তা রাজনৈতিক রূপ নেয়। প্রায় দুই ঘণ্টা চলা এ সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় বেড়া পৌর বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি বেশ কিছু দোকান ও বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে বেড়া পুরান বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এলাকায় সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানা গেছে,বেড়া পৌর এলাকার হুরা সাগর নদীর বৃশালিখা নৌবন্দর ঘাটের নিয়ন্ত্রনকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে দুই মহল্লার মধ্যে আগে থেকেই উত্তেজনা ছিল। সোমবার দুপুরে সওদাগরপাড়ার এক বিএনপি কর্মীকে মারধরের খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের পর বৃশালিখা মহল্ল্লার লোকজন মসজিদের মাইক ব্যবহার করে লোকজন জড়ো করেন। কিছুক্ষণ পর সওদাগরপাড়ার বাসিন্দারাও একইভাবে মাইক ব্যবহার করে অবস্থান নেন। পরে বৃশালিখা মহল্ল্লার লোকজন সওদাগরপাড়ায় গিয়ে হামলা চালান। এ সময় তাঁরা বেড়া পৌর বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের খবর ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য মহর্ল্লাল বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে অবস্থান নেন। এতে সংঘর্ষ আরও তীব্র আকার ধারণ করে। এ সময় দেশীয় অস্ত্র লাঠিশোটা নিয়ে দু গ্রুপ সংঘর্ষে জরিয়ে পরে। সংঘর্ষের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভানোর কাজ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েজন জানান, মুলত ঘাট দখল ও চাঁদাবাজি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এমনটা চলছিল। তবে রাতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আমরা আতঙ্কে রয়েছি।
এ ব্যাপারে বেড়া পৌর বিএনপির সভাপতি ফজলুর রহমান ফকির বলেন, আমি শুনেছি দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে। যাদের ঘাটে স্বার্থ আছে তারাতারাই মারামারি করেছে। আসেলে এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)এ কে এম হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্য টহল দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও)মোরশেদুল ইসলাম বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান,এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। প্রয়োজনে ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।