গত বছর নিজেদের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩–০ ব্যবধানে হারের অভিজ্ঞতা এখনো ভুলতে পারেনি ভারতীয় দল। সেই ধাক্কাই এবার শিক্ষা হয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকার। তিনি বলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজ থেকেই ভারত ঘুরে দাঁড়াতে চায়। দুই ম্যাচের এই সিরিজ শুরু হবে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) আহমেদাবাদে।
আগরকার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কারণে প্রতিটি ম্যাচ এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ঘরের মাঠে সবসময়ই শক্তিশালী। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটা ছিল একেবারেই বাজে। ওটা আমাদের জন্য জাগরণী ডাকের মতো ছিল। আমরা চাই না সেই ভুল আর কখনো হোক।” তিনি আরও যোগ করেন, “ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আসন্ন চার টেস্ট আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যত বেশি সম্ভব পয়েন্ট ঘরে তুলতে হবে।”
নির্বাচক কমিটি দীর্ঘদিনের জন্য ভারতের ‘নম্বর তিন’ ব্যাটসম্যান খুঁজে বের করতে চাইছে। প্রায় দুই দশক ধরে যে জায়গাটি সামলেছেন রাহুল দ্রাবিড় ও চেতেশ্বর পূজারা। এখন সেই দায়িত্ব নিতে পারেন বি সাই সুদর্শন। ইংল্যান্ডে তিন টেস্টে তিনি একটি অর্ধশতকসহ ১৪০ রান করেছিলেন। সম্প্রতি ভারত ‘এ’ দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’র বিপক্ষে টানা দুটি অর্ধশতক হাঁকিয়ে নির্বাচকদের আস্থা অর্জন করেছেন। আগরকার বলেন, “আমরা চাই ওকে একটানা সুযোগ দিতে। ওর মধ্যে সম্ভাবনা আছে।”
মধ্যক্রমে নজরে আছেন দেবদত্ত পাডিক্কলও। ওপেনার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও গত দুই মৌসুম ধরে তিনি মাঝের সারিতে রান করে আসছেন। ইনজুরির কারণে ইংল্যান্ড সফরে ভারত ‘এ’ দলে সুযোগ মিস করলেও লখনৌতে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’র বিপক্ষে আনঅফিসিয়াল টেস্টে ১৫০ রানের ইনিংস খেলে আলোচনায় এসেছেন। আগরকার মনে করেন, রিশভ পান্ত সুস্থ হয়ে ফিরলে পাডিক্কলকে হয়তো ৫ কিংবা ৬ নম্বর পজিশনে ভাবা যেতে পারে।
আরেক প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ নিথিশ কুমার রেড্ডির কথা উল্লেখ করে আগরকার বলেন, “সে লর্ডসে দারুণ বোলিং করেছে। চাপের ম্যাচে ব্যাটিংয়েও ভালো ছিল। এখনও তরুণ, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নতি করবে। ভবিষ্যতে অলরাউন্ডার হিসেবে ভারসাম্য এনে দিতে পারে।”
অন্যদিকে, নিয়মিত খেলা না থাকার কারণে দলে নেই মোহাম্মদ শামি। আগরকার জানান, “গত দুই–তিন বছরে সে মাত্র দুটি ফার্স্ট–ক্লাস ম্যাচ খেলেছে। পারফরমার হিসেবে আমরা জানি সে কী করতে পারে, কিন্তু খেলার মধ্যে থাকতে হবে।” একই কারণে ইশান কিষাণকেও রাখা হয়নি।
শ্রেয়াস আইয়ার আপাতত ছয় মাসের জন্য লাল বলের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সহনশীলতা তৈরি করার লক্ষ্যে। তবে তিনি একদিনের দলে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবেই থাকবেন। আগরকার বলেন, “আমরা চাই ও খেলুক এবং ভালো খেলুক। কারণ ওয়ানডে দলে সে অন্যতম ভরসা।”
ভারতীয় ক্রিকেটে ঘরের মাঠে আধিপত্য বজায় রাখার ঐতিহ্য আছে। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ধাক্কা দলের জন্য সতর্কবার্তা হয়ে এসেছে। আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ তাই শুধু জয় নয়, বরং আত্মবিশ্বাস ফেরানোর বড় মঞ্চ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।