পটুয়াখালী বাউফলে গ্রীষ্মকালীন ফুটবল খেলা প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে মো. আবদুল্লাহ আরাফাত (১৫) নামের এক খেলোয়ার শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে আহত করেছে অপর এক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার সময় বাউফল পাবলিক মাঠে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী নাজিপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র ও একই ইউনিয়নের ইসমাইল গাজীর ছেলে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী অর্ণব বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডের ভাড়াটিয়া তোফাজ্জল হোসেন তপুর পুত্র। তাদের গ্রামের বাড়ী টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর পৌরশহরের ৮নং ওয়ার্ডের মজিদ কলেজ রোড।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১১টার সময় বাউফল পাবলিক মাঠে গ্রীষ্মকালীন ফুটবল খেলা ২০২৫ আরম্ভ হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম, বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান, একাডেমিক সুপারভাইজার নুরনবী সহ বিভিন্ন মাদ্রাসা ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর ১২টার সময় নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বাউফল সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় একাদশ মাঠে নামে। খেলা গোলশূন্য হলে ট্রাইবেকারে চলে যায়। নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় তিন গোলে বিজয় অর্জণ করলে বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী এ.কে অর্ণব নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাতকে আচমকা ছুরিকাঘাত করে। পুলিশ তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে পুলিশের উপরও হামলা করে অর্ণব ও তার সহযোগীরা।
নাজিরপুর একাদশের অধিনায়ক তাহমিদ ইসলাম বলেন, ওই ছেলেকে আমরা চিনিনা। সে কোন খেলোয়ারও না। আরাফাত ভাল খেলে ওদেরকে হারিয়েছে বলেই এ হামলা করেছে।
আহত আরাফাতের মা কুলসুম বেগম বলেন, "প্রশাসনের সামনে আমার ছেলেকে দিন-দুপুরে ছুরিকাঘাত করেছে। আবারও করতে পারে। ভাল পড়ালেখা ও খেলাধুলা করে এটা কি আমার ছেলের অপরাধ? আমি বিচার চাই। "
হামলায় আহত উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, "আমি সহ আর একজন পুলিশ সদস্য খেলার মাঠে দায়িত্বে ছিলাম। সিক্সগিয়ার (ছুরি) নিয়ে একটি ছেলে অপর এক শিক্ষার্থীকে হামলা করে। থামাতে গেলে আমি কিছুটা আঘাত পাই।"
নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইনুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিদ্যালয় জয়লাভ করেছে। ছেলেরা উল্লাস করছে এরই মধ্যে এক ছেলে এসে আমাদের ছেলেদের উপর ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পুলিশ এগিয়ে গেলে তাদের উপরও হামলা করে।
বাউফল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিনিধি খেলার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রশাসনকে বলেছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও তাদের স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের উপর হামলাকারী যেই হোক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।