খাগড়াছড়িতে মসজিদে হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

এফএনএস (মোবারক হোসেন; লক্ষ্ণীছড়ি, খাগড়াছড়ি) :
| আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম | প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম
খাগড়াছড়িতে মসজিদে হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

পার্বত্য খাগড়াছড়িতে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ডাকা অবরোধ চলাকালে ভয়াবহ সহিংসতায় মডেল মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে একদল সন্ত্রাসী খাগড়াছড়ি উপজেলা এলাকার মডেল মসজিদের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে ভেতরে তান্ডব চালায়। আতঙ্কে মুসল্লিরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। শুধু মসজিদেই নয়, আশপাশের দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ, রাস্তায় টায়ার জ্বালানো এবং পথচারীদের নির্বিচারে মারধরের ঘটনাও ঘটে। এতে নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।

এর আগে, এক স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের বিচারের দাবিতে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবরোধ পালিত হচ্ছিল। তবে দুপুরের পর হরতালের নামে এই অবরোধ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এসময় মহাজন পাড়া এলাকায় থেমে থেমে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাতের খবরও পাওয়া যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীরা শুধু সম্পদ ধ্বংস করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং গুলি বর্ষণ করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি এবং ধর্মীয় স্থানে হামলার মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়েছে। এতে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সাধারণ মানুষ অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসন শনিবার দুপুর ২টা থেকে খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ও জননিরাপত্তার আশঙ্কায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ মোতাবেক জারি করা এ আদেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পযন্ত— বহাল থাকবে।

আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৪৪ ধারা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার এই আদেশ জারি করেন। 

এর ফলে খাগড়াছড়ি শহর ও আশপাশে এখন টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে স্থানীয়রা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ কামনা করছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলা শহরের বিভন্ন স্থানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। সেনাবাহিনী উভয়কেই শান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিকেলে গুইমারা উপজেলায়ও ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইরিন আক্তার এ আদেশ জারি করেন। আদেশে বলা হয় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশংকায় জানমাল নিরাপত্তার রক্ষায় জনস্বার্থে এই আদেশ জারি করা হলো।  

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে