“জলাতঙ্ক নির্মূলে, কাজ করি সবাই মিলে”-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পালিত হলো বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২৫। দিবসটি উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্কর। লৌহজং উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোসাম্মৎ রোকাইয়া সারমিন, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মাসুদ আলম। উপ-সহকারী প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস ২০২৫। প্রাণঘাতী এই রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ২০০৭ সাল থেকে বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে দিবসটি পালন হয়ে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য- “জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে, কাজ করি সবাই মিলে”।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্কর বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ৬০ হাজার মানুষ জলাতঙ্কে মারা যায়, যার মধ্যে বাংলাদেশেও প্রাণহানি ঘটে। কুকুর, বিড়ালসহ বিভিন্ন প্রাণীর কামড়ে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২ হাজার মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হন। সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে এ রোগ সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
জলাতঙ্কের কারণ সম্পর্কে বলেন, জলাতঙ্ক একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা সংক্রমিত প্রাণীর কামড়, আঁচড় বা লেহনের মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত প্রাণীর লালা থেকে ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। ফলে জ্বর, মাথাব্যথা, অবসাদ, অস্বাভাবিক আচরণ, পানির ভয় ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে বলেন, কুকুর বা প্রাণীর কামড় হলে সঙ্গে সঙ্গে সাবান ও পানি দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ক্ষত ধুয়ে ফেলতে হবে। এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভ্যাকসিন নিতে হবে। অকারণে প্রাণী হত্যা নয়, বরং নিয়মিত টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কুকুর বা অন্য প্রাণীর কামড়ের পর কোনো অবস্থায় অবহেলা করা যাবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নেছার উদ্দিন বলেন, জলাতঙ্ক একটি ভয়াবহ রোগ। সচেতনতা ও টিকা প্রদানের মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি পোষা প্রাণীর টিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। এসময় উপজেলার বিভিন্ন সেক্টরের স্টক হোল্ডারগন উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার পরে একটি র্যালি উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।